অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো নীতিগত অবস্থান নেই বলে জানিয়েছেন আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু। তিনি বলেন, ‘সরকারের কোনো প্রিন্সিপাল পজিশন নেই। বিএনপির চাপে উনি কিছুক্ষণ ডানে ছোটেন, জামায়াতের চাপে কিছুক্ষণ বাঁয়ে ছোটেন, আবার এনসিপির চাপে মাঝে মাঝে ওপরে ওঠার চেষ্টা করেন।’
রোববার (২ নভেম্বর) রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) মিলনায়তনে ‘স্বল্প আস্থার সমাজে সংস্কার ও নির্বাচনি ঐক্যের রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন মঞ্জু।
সভাটি যৌথভাবে আয়োজন করে আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি), বাংলাদেশ রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন এবং ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশ (আপ বাংলাদেশ)। আলোচনায় তিন দলই একসঙ্গে রাজনৈতিক সংস্কার ও ঐক্যবদ্ধভাবে পথচলার অঙ্গীকার করে।
মঞ্জু বলেন, ‘রাষ্ট্র এখন গভীর সংকটে রয়েছে। জুলাই মাসে প্রস্তাবিত জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশের পরও রাজনৈতিক দলগুলো ঐক্যে পৌঁছাতে পারেনি। সবকিছু গুছিয়ে আনার পরেও সংকট ঘনীভূত হয়েছে তিনটি জায়গায়—গণভোট আগে না পরে, নোট অব ডিসেন্টার কেমন হবে এবং আগামী নির্বাচন আসলে কীসের নির্বাচন হবে।’ তার মতে, সরকারের চাপমুখী রাজনীতি এবং অবস্থানহীনতাই এই অচলাবস্থার মূল কারণ।
সরকারের উদ্দেশে এবি পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, ‘আপনারা যদি রাষ্ট্রের মালিক সাজার চেষ্টা করেন, তাহলে চলবে না। মানুষের দুঃখ-দুর্দশা ও প্রয়োজনের কথা শুনতে হবে। দেশের সংকট সমাধানে জনগণের সঙ্গে যোগাযোগ ও সংলাপ জরুরি।’
তরুণদের প্রতি আলোচনার আহ্বান জানিয়ে মঞ্জু বলেন, ‘তরুণরাও এখন রাস্তায় নামতে চায়। কারণ, সত্যি কথা বলতে কী রাস্তা বন্ধ না করলে দাবি আদায় হয় না। উপদেষ্টারা জনগণের সঙ্গে বসে কথা বলার সময় পান না, তাই কদিন পর তাদের রাস্তায় রাস্তায় হাঁটতে হবে, জনগণের সঙ্গে কথা বলতে হবে।’
সভায় ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশের (আপ বাংলাদেশ) আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, ‘জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের পরও অন্তর্ভুক্তিমূলক রাষ্ট্রের আশা ব্যর্থ হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলো রাষ্ট্রের দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে ক্ষমতায় যাওয়ার পথ খুঁজছে, জনগণের কল্যাণের কথা ভাবছে না।’
এবি পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দিদার ভুইয়া বলেন, ‘বিপ্লব এখন বিলাসে পরিণত হয়েছে। ছেঁড়া স্যান্ডেল থেকে ফাইভ স্টার হোটেল কোনো বিপ্লবীর চরিত্র হতে পারে না।’
রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সভাপতি হাসনাত কাইয়ুমের সভাপতিত্বে সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ হাসিব উদ্দিন হোসেন, জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, এবি পার্টির সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট আবদুল ওহাব মিনার এবং আপ বাংলাদেশের সদস্যসচিব আরেফিন মো. হিজবুল্লাহ।
সভায় অংশগ্রহণকারী নেতারা বলেন, দেশের রাজনৈতিক সংস্কার ও গণতান্ত্রিক পুনর্গঠনের জন্য যৌথভাবে পদক্ষেপ নেওয়ার এখনই সময়। ন্যায়বিচার, সুশাসন এবং অংশগ্রহণমূলক রাজনীতির ভিত্তিতে নতুন ধারার ঐক্য গঠনের অঙ্গীকারও করেন তাঁরা।



