ঢাকা রবিবার, ২৫ মে, ২০২৫

চট্টগ্রাম বন্দর কোনোভাবেই বিদেশিদের দেওয়া যাবে না : গয়েশ্বর 

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: মে ২৫, ২০২৫, ০৫:০০ পিএম
ছবি- সংগৃহীত

চট্টগ্রাম বন্দর কোনোভাবেই বিদেশিদের দেওয়া যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। 

রোববার (২৫ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘দেশ বাঁচাও, বন্দর বাঁচাও আন্দোলনে’র এক সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

গয়েশ্বর বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দর একটি লাভজনক ও প্রাকৃতিক বন্দর। সেটি কোনোভাবেই বিদেশিদের দেওয়া যাবে না। বন্দরের নিউমুরিং কন্টেইনার টার্মিনাল বিদেশিদের হাতে দেওয়া হলে বৃহত্তর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।’

তিনি বলেন, ‘সরকার দুর্নীতি বন্ধের নামে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। বরং পুরোনো দুর্নীতিবাজরাই এখনো সক্রিয়।’

গয়েশ্বর বলেন, ‘যদি দেশে দক্ষ লোক না থাকে, তবে প্রয়োজনে বিদেশ থেকে বিশেষজ্ঞ আনা যেতে পারে, কিন্তু মালিকানা বা নিয়ন্ত্রণ বিদেশিদের হাতে দেওয়া যায় না।’

সভায় আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ এলডিপির চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু, বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ ফিরোজ, জাতীয় পার্টির মোস্তফা জামাল হায়দার, গণঅধিকার পরিষদের নূরুল হক নূর, সিপিবির রুহিন হোসেন প্রিন্স, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাইফুল হক প্রমুখ।

এলডিপি চেয়ারম্যান সেলিম বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দর একটি প্রাকৃতিক বন্দর, যা ১৩৮ বছর ধরে চলমান। এখানে বড় জাহাজ ভেড়ানো সম্ভব না হলেও টার্মিনাল সম্প্রসারণের মাধ্যমে সক্ষমতা বাড়ানো সম্ভব। বিদেশি কোম্পানিকে দেওয়া হলে তারা নিজেদের মতো করে ট্যারিফ নির্ধারণ করবে, যা দেশের অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব ফেলবে।’

তিনি অভিযোগ করেন, ‘ডিপি ওয়ার্ল্ড নামক একটি বিদেশি কোম্পানিকে বন্দর ব্যবস্থাপনায় দেওয়ার পাঁয়তারা চলছে, যা অতীতেও বিরোধিতার মুখে পড়েছিল। এখন আবার সাবের হোসেন চৌধুরীর মাধ্যমে সেই চেষ্টার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে।’

এবি পার্টির চেয়ারম্যান মঞ্জু বলেন, ‘এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত জনগণের মতামত ছাড়া নেওয়া উচিত নয়। গণশুনানি ও রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।’

সভায় বক্তারা অভিযোগ করেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব নির্বাচন আয়োজন করা, কিন্তু তারা বন্দর ও জাতীয় সম্পদ নিয়ে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, যা সংবিধানসম্মত নয়।’

বক্তারা সরকারের প্রতি আহ্বান জানান, চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ থেকে বিরত থাকতে এবং দ্রুত নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা করতে। অন্যথায় জনগণকে সঙ্গে নিয়ে বৃহত্তর কর্মসূচি দেওয়া হবে বলেও তারা হুঁশিয়ারি দেন।

সভাপতির বক্তব্যে ১২-দলীয় জোটের সমন্বয়ক সৈয়দ এহসানুল হুদা বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দর জাতীয় স্বার্থে গুরুত্বপূর্ণ। সরকার যদি বিদেশি হস্তক্ষেপে এগোয়, তবে আমরা বৃহত্তর ঐক্য গড়ে আন্দোলনে নামতে বাধ্য হব।’