ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৯ মে, ২০২৫

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক হয়েও বিএনপির সদস্য সচিব!

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: মে ২৬, ২০২৫, ১১:৩৮ এএম
শামসুল আলম সরকার ওরফে মোস্তফা শামসুল। ছবি- সংগৃহীত

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন সহকারী শিক্ষক সরকারি চাকরিবিধির তোয়াক্কা না করে বিএনপির রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে নিয়মিত অংশগ্রহণ করছেন। ওই সরকারি শিক্ষককে ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিবের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদেও আসীন করা হয়েছে। যা সরকারি আইনের চরম লঙ্ঘন।

ওই শিক্ষকের নাম শামসুল আলম সরকার ওরফে মোস্তফা শামসুল (৫৪)। তিনি কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার উমর মজিদ ইউনিয়নের কালীবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত। চাকরিবিধি লঙ্ঘন করে ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য সচিব পদে দায়িত্ব নেওয়ায় তার নিজ দলসহ প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। বিষয়টি স্থানীয়দের মাঝেও সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।

সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা-১৯৭৯ এর বিধি-২৫ (১) এ বলা হয়েছে, ‘সরকারি কর্মচারী কোনো রাজনৈতিক দল বা তাদের অঙ্গ সংগঠনের সদস্য হতে পারবেন না। রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে কোনোভাবে যুক্ত হতে বা কোনো প্রকারে অংশগ্রহণ বা সহযোগিতা করতে পারবেন না। বিধি-২৫ (৩) এ বলা হয়েছে, কোনো সরকারি কর্মচারী আইন পরিষদ নির্বাচনে কোনো প্রকার প্রচার অথবা অন্য কোনোভাবে হস্তক্ষেপ বা প্রভাব প্রয়োগ অথবা অংশগ্রহণ করতে পারবেন না।’

গত ৩০ এপ্রিল উমর মজিদ ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। সরকারি চাকরিজীবীদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষ অংশগ্রহণ নিষেধ থাকলেও শিক্ষক শামসুল আলম বিধি ভঙ্গ করে ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য সচিব পদ বাগিয়ে নিয়েছেন। এ নিয়ে গত ১৮ মে আবু সাঈদ সরকার নামে আহ্বায়ক কমিটির এক সদস্য কুড়িগ্রাম জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ডিপিইও) বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ডিপিইও) স্বপন কুমার রায় চৌধুরী অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

ডিপিইও স্বপন কুমার বলেন, ‘সরকারি চাকরিজীবীদের রাজনৈতিক দল কিংবা কর্মকাণ্ডে অংশ নেওয়া সম্পূর্ণ নিষেধ। লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর ওই শিক্ষককে ডেকে নেওয়া হয়েছিল। ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য সচিব পদে থাকার বিষয়টি তিনি স্বীকার করেছেন। তাকে সতর্ক করা হয়েছে। এরপরও তিনি রাজনৈতিক দলের পদ ছেড়ে না দিলে তার বিরুদ্ধে বিধি অনুযায়ী বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

অভিযোগকারী ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য আবু সাঈদ সরকার বলেন, ‘ওই শিক্ষক সরকারি চাকরি করেও কীভাবে রাজনৈতিক দলের পদ বাগিয়ে নিতে পারেন? অর্থের বিনিময়ে পদ-পদবি পেয়েছেন বলে স্থানীয় বিএনপিতে আলোচনা আছে। আমি লিখিত অভিযোগ দিলেও এখনো ওই শিক্ষক দলীয় কর্মকাণ্ডে অংশ নিচ্ছেন।’

অভিযুক্ত শিক্ষক শামসুল আলম সরকার বলেন, ‘আমি দলীয় পদ ছেড়ে দেব। আর কোনো কর্মকাণ্ডে অংশ নেব না। এ নিয়ে ডিপিইও স্যারের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে।’