ঢাকা মঙ্গলবার, ১০ জুন, ২০২৫

ইসরায়েলের কাছে গোপনে এক মুসলিম দেশের তেল বিক্রি

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: জুন ১০, ২০২৫, ০৩:৩৬ এএম
ছবি- সংগৃহীত

গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের বর্বরতার বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে মুসলিম দেশ আজারবাইজান ইসরায়েলে তেল রপ্তানি বন্ধের যে ঘোষণা দিয়েছিল, তা আসলে ছিল লোক দেখানো ও প্রতারণাপূর্ণ। ইসরায়েলের প্রভাবশালী দৈনিক হারেৎজের এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য ফাঁস হয়েছে।

সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তুরস্কের চাপের মুখে ২০২৩ সালের শেষ দিকে আজারবাইজান ইসরায়েলে তেল বিক্রি বন্ধের ঘোষণা দেয়। এমনকি, এরপর দেশটির কাস্টমস ডাটাবেজ থেকে ইসরায়েলে তেল রপ্তানির সব তথ্যও মুছে ফেলা হয়। তবে হারেৎজের দাবি, বাস্তবে তেল সরবরাহ কোনোদিনই বন্ধ হয়নি।

হারেৎজ আরও জানায়, তেল সরবরাহের জন্য আজারবাইজান এখন ‘তৃতীয় দেশের’ পরিচয় ব্যবহার করছে। ইসরায়েলে পৌঁছাতে এসব তেল তুরস্কের ভেতর দিয়ে যাওয়া আন্তর্জাতিক পাইপলাইন ব্যবহার করছে, যদিও কাগজে-কলমে এই তেলের গন্তব্য অন্য কোথাও দেখানো হচ্ছে।

একজন ইসরায়েলি কর্মকর্তা হারেৎজকে নিশ্চিত করে বলেছেন, ‘আমরা আজারবাইজানিদের কাছ থেকে আশ্বাস পেয়েছি, জ্বালানি ও কৌশলগত সম্পর্ক পূর্বের মতোই অব্যাহত থাকবে। চিন্তার কিছু নেই।’

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের মে মাসে গাজায় ইসরায়েলি নৃশংসতা এবং ত্রাণবাহী তুর্কি উড়োজাহাজকে গন্তব্যে না পৌঁছাতে দেওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে তুরস্ক ইসরায়েলের সঙ্গে সব ধরনের বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিন্নের ঘোষণা দিয়েছিল। 

প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান এই সিদ্ধান্তে সরব ছিলেন। তবে, বিরোধী দলগুলোর দাবি, আজারবাইজানের তেল বহনকারী পাইপলাইন এখনো তুরস্কের ভেতর দিয়েই ইসরায়েলে যাচ্ছে, যা এরদোয়ানের অবস্থানকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।

ইস্তাম্বুলে আজারবাইজানের রাষ্ট্রায়ত্ত তেল কোম্পানি এসওসিএআর-এর অফিসের সামনে সাধারণ মানুষ তীব্র বিক্ষোভ করেছে। বিক্ষোভকারীরা অভিযোগ করেন, ‘মুসলিম পরিচয় নিয়ে দখলদারদের সঙ্গে ব্যবসা করা শুধু ভণ্ডামি নয়, এটি ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা।’

হারেৎজের তথ্যমতে, ২০২৩ সালে ইসরায়েলের আমদানি করা মোট তেলের ৩০ শতাংশই এসেছে আজারবাইজান থেকে। এই নির্ভরতা এখনো গোপনে বজায় রয়েছে। যদিও ইসরায়েল সরকার বলছে, আজারবাইজান তেল সরবরাহ বন্ধ করলেও তারা বিকল্প উৎস খুঁজে নেবে। 

এই প্রতিবেদন মুসলিম বিশ্বে আজারবাইজানের অবস্থান এবং ইসরায়েল-তুরস্ক-আজারবাইজান ত্রিমুখী সম্পর্কের জটিলতা নিয়ে নতুন করে বিতর্ক সৃষ্টি করেছে।