সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসেই মুম্বাইয়ে ঘটে গেল মর্মান্তিক ট্রেন দুর্ঘটনা। অতিরিক্ত ভিড়ে ঠাসা লোকাল ট্রেন থেকে ছিটকে পড়ে মৃত্যু হয়েছে কমপক্ষে পাঁচজন যাত্রীর। সোমবার সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ এই ঘটনা ঘটে মুম্বরা ও ডিভা স্টেশনের মাঝামাঝি এলাকায়।
প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, চলন্ত দুই ট্রেন কাছাকাছি চলে আসার সময় ফুটবোর্ডে ঝুলতে থাকা যাত্রীদের ব্যাগ পরস্পরের সঙ্গে ধাক্কা খায়, ফলে ভারসাম্য হারিয়ে রেললাইনে পড়ে যান একাধিক যাত্রী।
দুর্ঘটনাস্থলে দ্রুত পৌঁছায় রেল পুলিশ ও প্রশাসন। আহতদের উদ্ধার করে কালভার হাসপাতালসহ বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
চিকিৎসকদের একাংশ জানিয়েছেন, বেশ কয়েকজনের অবস্থা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক। এই ঘটনায় রেল পরিষেবা সাময়িকভাবে ব্যাহত হয়েছে, দেখা গেছে বিশৃঙ্খলা ও আতঙ্কের ছবি স্টেশন চত্বরে।
সেন্ট্রাল রেলের জনসংযোগ কর্মকর্তা ড. স্বপ্নিল নিলা জানান, ‘একটি ফাস্ট লোকাল ট্রেনে দাঁড়িয়ে থাকা অন্তত আটজন যাত্রী ট্রেন থেকে পড়ে যান। যাত্রীদের ব্যাগ একে অপরের সঙ্গে ধাক্কা খায় বলেই এই দুর্ঘটনা ঘটে বলে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে।’
তিনি আরও জানান, ভবিষ্যতে এমন দুর্ঘটনা এড়াতে নতুন রেকে স্বয়ংক্রিয় দরজা বন্ধ করার ব্যবস্থা থাকবে। পুরনো রেকগুলোকেও পুনঃনকশা করে এই সুবিধা যুক্ত করা হবে। ঘটনাটি ঘিরে রাজনৈতিক মহলেও প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
শিব সেনার ঠাণে থেকে নির্বাচিত সাংসদ নরেশ মাস্কে এক স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘যাত্রীরা কীভাবে পড়ে গেলেন, সেটার বিস্তারিত তদন্ত হওয়া দরকার। এটা যদি লোকাল ট্রেন হত, তাহলে ভিড়কে দায়ী করা যেত। কিন্তু এখানে তো চলন্ত এক্সপ্রেস ট্রেনের ঘটনাও রয়েছে।’ তাঁর দাবি, ‘প্রশাসনের আরও সজাগ হওয়া উচিত ছিল।’
এক্স-এ পোস্ট করে মহারাষ্ট্র বিধান পরিষদের বিরোধী দলনেতা আম্বাদাস দানভে লিখেছেন, ‘পুষ্পক এক্সপ্রেস থেকে হঠাৎ এতজন যাত্রী পড়ে যাওয়া এবং মৃত্যু নিঃসন্দেহে মর্মান্তিক এবং রেল নিরাপত্তা নিয়ে বড় প্রশ্ন তোলে।’
মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবীস এই ঘটনাকে ‘দুর্ভাগ্যজনক’ আখ্যা দিয়ে জানান, আহতদের চিকিৎসার সবরকম ব্যবস্থা করা হয়েছে।
প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ যে লোকাল ট্রেনে যাতায়াত করেন, সেই ‘লাইফলাইন’-এ এরকম প্রাণঘাতী দুর্ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই আতঙ্ক ছড়িয়েছে সাধারণ যাত্রীর মনে। এমন ঘটনা ভবিষ্যতের জন্য বড় সতর্কবার্তা হিসেবে দেখছে রেল প্রশাসন
