মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলায় ঈদুল আজহার ছুটিতে গ্রামের বাড়িতে এসে এক হৃদয়বিদারক ঘটনার শিকার হলেন বাবা ও মেয়ে। সাঁতার শেখাতে গিয়ে পুকুরে ডুবে মর্মান্তিকভাবে মারা গেছেন ইটভাটা ব্যবসায়ী বাবুল আহমদ (৬০) এবং তাঁর মেধাবী কন্যা হালিমা মোহাম্মদ (১৭)।
এই ঘটনায় হামিদপুর গ্রামে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। আজ সোমবার বিকেলে জায়ফরনগর ইউনিয়নের হামিদপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত হালিমা ঢাকার স্বনামধন্য ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন এবং ২৬ জুন থেকে শুরু হতে যাওয়া এইচএসসি পরীক্ষায় তাঁর অংশ নেওয়ার কথা ছিল।
স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, বাবুল আহমেদের স্ত্রী, তিন মেয়ে ও এক ছেলে ঢাকায় থাকেন এবং সেখানেই লেখাপড়া করেন। ঈদের ছুটিতে চার-পাঁচ দিন আগে তাঁরা গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলেন। সন্তানদের মধ্যে কেউই সাঁতার জানত না।
সোমবার বিকেল চারটার দিকে বাবুল আহমদ তাঁর মেয়ে হালিমাকে প্লাস্টিকের টিউবের সাহায্যে পুকুরে সাঁতার শেখাতে নামেন। হঠাৎ করেই টিউব থেকে হালিমার হাত ফসকে যায় এবং সে পানিতে ডুবে যেতে শুরু করে।
বাবুল তাঁর মেয়েকে বাঁচানোর জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করেন, কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে দুজনই পানির নিচে তলিয়ে যান।
আশপাশের লোকজন ছুটে এসে প্রায় আধা ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে বাবা-মেয়েকে উদ্ধার করেন। দ্রুত তাঁদের কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলেও পথেই দুজনের মৃত্যু হয়।
বাবুলদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় এক শোকাবহ দৃশ্য। আলাদা দুটি কক্ষে বাবা ও মেয়ের নিথর দেহ রাখা ছিল। এবং স্বজনেরা তাঁদের পাশে বসে বিলাপ করছিলেন। এসময় প্রতিবেশীরা তাঁদের সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন।
বাবুলদের আত্মীয় ও জায়ফরনগর ইউপির ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আজাদ মিয়া জানান, সোমবার রাত ১০টায় বাবা-মেয়ের জানাজা সম্পন্ন হয় এবং পরে তাঁদের পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।