ঢাকা শনিবার, ০২ আগস্ট, ২০২৫

মার্কিন শুল্ক কমলেও বাস্তবিক প্রভাব নিয়ে বড় শঙ্কায় আমীর খসরু

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: আগস্ট ১, ২০২৫, ১০:৪৪ পিএম
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। ছবি- সংগৃহীত

বাংলাদেশি পণ্যে যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক হার কমানোর বিষয়টি ‘ইতিবাচক’ হিসেবে দেখলেও তা ‘বিশ্লেষণের’ ওপর ছেড়ে দিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী

তিনি এটি শুধু কাগজে-কলমের হার হিসেবে দেখছেন না। এর বাস্তবিক প্রভাব অনেক বড় হতে পারে বলেও শঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। তিনি বলেছেন, ‘পুরো বিষয়টা বিশ্লেষণ করতে হলে জানতে হবে এর বিপরীতে আর কী কী শর্ত বা সমঝোতা হয়েছে।’

শুক্রবার (১ আগস্ট) গুলশানে নিজ বাসভবনে সাবেক এই বাণিজ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘ট্যারিফের বিপরীতে আর কী দিতে হয়েছে সেটা না জানা পর্যন্ত এর প্রকৃত প্রভাব আমরা মূল্যায়ন করতে পারছি না। সরকারের উচিত এসব বিষয় খোলাসা করা।’

বাংলাদেশ থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর ২০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। বৃহস্পতিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এক নির্বাহী আদেশে নতুন এ হার ঘোষণা করা হয়।

যদিও সবশেষ বাংলাদেশকে চিঠি দিয়ে ৩৫ শতাংশ পাল্টা শুল্কের কথা জানিয়েছিল মার্কিন প্রশাসন। ওই হিসাবে শুল্ক ১৫ শতাংশ কমিয়ে নতুন হার ঘোষণায় করা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের এ সিদ্ধান্তকে রপ্তানি খাতের জন্য ‘সন্তোষজনক অবস্থা’ হিসেবে দেখছেন বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরামের সদস্য আমীর খসরু।

তবে তিনি বলেন, এটা জয়-পরাজয়ের কোনো বিষয় নয়।

‘প্রতিযোগিতার বিবেচনায় আমরা এখন তুলনামূলকভাবে একটা সন্তোষজনক অবস্থানে আছি। বাংলাদেশ ২০ শতাংশ, পাকিস্তান ১৯ শতাংশ, ভিয়েতনাম ২০ শতাংশ, আর ভারত ২৫ শতাংশ শুল্ক দিচ্ছে। এই হিসেবে আমাদের অবস্থান মোটামুটি ভালো’, যোগ করেন তিনি।

আমীর খসরু এও বলেন, ‘ট্যারিফ তো শুধু একটি অংশ। পুরো বিষয়টি আসলে একটা প্যাকেজ ডিল, যার মধ্যে অনেক আলোচনা, বোঝাপড়া, স্বার্থ আদান-প্রদান জড়িত। কিন্তু আমরা শুধু ট্যারিফের হার জানি, এর পেছনের আলোচনা, চাপ বা শর্তগুলোর বিষয়ে এখনও কোনো কিছু জানি না।’

কদিন আগেই যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২৫টি বোয়িং বিমান কেনার কথা জানিয়েছিলেন বাণিজ্য সচিব। রয়েছে গম আমদানীর বিষয়টিও।

এক প্রশ্নে আমীর খসরু আরও বলেন, ‘অবশ্যই কিছু না কিছু করতেই হয়। কারণ যুক্তরাষ্ট্রের এই অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের মূল উদ্দেশ্যই তাদের পণ্য রপ্তানির স্বার্থ রক্ষা করা। তাই বোয়িং কেনা বা অন্য কোনো চুক্তি এর অংশ কি না, সেটা খতিয়ে দেখতে হবে।’

এ সময় শুল্ক কমলেও এর প্রভাব কীভাবে অর্থনীতি ধারণ করতে পারবে সে বিষয়ে সতর্ক মন্তব্য করেন তিনি।

আমীর খসরু বলেন, ‘বাংলাদেশের অর্থনীতি, ব্যবসায়ী সমাজ এবং রপ্তানি খাত এটি কতটা গ্রহণ করতে পারবে সেটাই বড় প্রশ্ন। এটি শুধু কাগজে-কলমে একটা হার না, এর বাস্তবিক ইমপ্যাক্ট অনেক বড় হতে পারে।’

সাবেক এই বাণিজ্যমন্ত্রীর মতে, বাংলাদেশের রপ্তানি বাজার শুধু আমেরিকান নির্ভরশীল হলে ঝুঁকি বাড়বে।

‘আমাদের রপ্তানি বাজার আরও ডাইভারসিফাই করতে হবে বিদেশেও, দেশের অভ্যন্তরেও। বৈচিত্র্যময় রপ্তানি পণ্যের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক বাজারে টিকে থাকা এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ’, যোগ করেন তিনি।