জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেছেন, যদি ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু না হয় তাহলে তা বাতিল করে নতুন নির্বাচন দেওয়ার জন্য প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে দাবি জানাবে তার দল।
সোমবার (২৭ অক্টোবর) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অবস্থিত প্রথম আলো কার্যালয়ে আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে এই দাবি জানান জামায়াতের এই শীর্ষ নেতা। ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক ও সুষ্ঠু জাতীয় সংসদ নির্বাচন: রাজনৈতিক দলের কাছে নাগরিক সমাজের প্রত্যাশা’ শীর্ষক বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
অ্যাকশনএইড বাংলাদেশ এবং প্রথম আলোর যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে জামায়াতের পক্ষ থেকে প্রধান উপদেষ্টার কাছে দাবি তোলা হয়, যাতে সুষ্ঠু নির্বাচন না হলে তা বাতিল করার ঘোষণা দেওয়া হয়।
তাহের বলেন, ‘আমরা প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্পষ্ট ঘোষণা চাই, যদি নির্বাচন সুষ্ঠু না হয়, তবে তিনি তা বাতিল করে নতুন নির্বাচন আয়োজন করবেন। সরকারের পক্ষ থেকে যদি সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয় এবং রাজনৈতিক দলগুলো আচরণবিধি লঙ্ঘন না করার অঙ্গীকার করে, তবে নির্বাচনে কোনো ধরনের ব্যত্যয় ঘটলে জনগণ তা জানতে পারবে।’
তিনি বলেন, ‘যদি নির্বাচন সুষ্ঠু হয়, তবে জামায়াত নির্বাচিতদের গলায় মালা পরাবে।’
আবদুল্লাহ তাহের আরও উল্লেখ করেন, ‘গত ৫৪ বছরে দেশে যে ব্যর্থতা এসেছে, তার অন্যতম প্রধান কারণ ছিল সুষ্ঠু নির্বাচনের অভাব। আগামী নির্বাচনে যদি সরকারের পক্ষ থেকে সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করা হয়, তাহলে রাজনৈতিক দলগুলো আচরণবিধি মেনে চলবে এবং নির্বাচন হবে অবাধ ও সুষ্ঠু।’
এ ছাড়া, তিনি দেশের বর্তমান রাজনৈতিক সংকটের দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, ‘বাংলাদেশে নেতৃত্বের সংকট সৃষ্টি হয়েছে। পরিবর্তন, নানা লড়াই এবং আন্দোলনের পর যে নেতৃত্ব এসেছে, তারা জনমানুষের আশা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। দুর্নীতি, নেতিবাচক কাজের ফলে পরিবর্তনের সুযোগ নষ্ট হয়েছে, এবং সুশাসনের বিপরীতে খারাপ শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থানকে ব্যতিক্রম হিসেবে দেখতে হবে, কারণ এতে অংশ নেওয়া ৮০ শতাংশ মানুষই ছিল কৃষক, শ্রমিক, দিনমজুর। তবে অভ্যুত্থানের পর এই শ্রেণির মানুষের প্রতি অবহেলা করা হয়েছে।’
জামায়াতের নায়েবে আমির সুষ্পষ্টভাবে জানান যে, নির্বাচনে জয়ী হলে জামায়াত ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করবে। তিনি বলেন, ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে, কারণ দুর্নীতি দেশের দারিদ্র্যের অন্যতম প্রধান কারণ। সুশাসন নিশ্চিত করতে পারলে এবং প্রশাসনের সর্বত্র জবাবদিহি প্রতিষ্ঠিত হলে দুর্নীতি অনেকটাই কমানো সম্ভব হবে।’
এর আগে দেশের ৯টি জেলায় আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকের প্রাপ্ত সুপারিশ আজকের এই অনুষ্ঠানে তুলে ধরেন অ্যাকশনএইড বাংলাদেশের উইমেন রাইটস লিড মরিয়ম নেছা। সভার সভাপতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অ্যাকশনএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির।



