ঢাকা শনিবার, ০৮ নভেম্বর, ২০২৫

সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত আমরা থামবো না: জামায়াত আমীর

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: নভেম্বর ৭, ২০২৫, ০৯:৫৬ পিএম
জামায়াত ইসলামের আমীর ডাঃ শফিকুর রহমান। ছবি- সংগৃহীত

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামের আমীর ডাঃ শফিকুর রহমান বলেছেন, দেশের প্রতিটি মানুষকে নিয়ে ন্যায়সঙ্গত, দুর্নীতি-মুক্ত ও উন্নত বাংলাদেশ গঠন করতে হবে। তিনি জানিয়েছেন, সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত জামায়াত থামবে না।

বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় নগরীর আমান উল্লাহ কনভেনশন হলে সিলেট মহানগর জামায়াত আয়োজিত সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এই কথা বলেন তিনি। 

শফিকুর রহমান বলেন, ‘বড় একটি দল বলেছে- তারা জামায়াতে ইসলামী ছাড়া বাকি সব দল নিয়ে কাজ করবে। কিন্তু আমরা বলছি, আল্লাহ যদি আমাদের সরকারে বসায়, আমরা সবাইকে নিয়ে দেশ গড়ব। দেশের চিত্র পাল্টে দিব। দুর্নীতি, সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজিমুক্ত সমাজ উপহার দেবো। সরকার গঠনের পর কেউ যদি আমাদের ওপর আগের মতো অবিচার চালানোর চেষ্টা করে, আমরা বসে থাকবো না। দোয়া করুন, সতর্ক থাকুন, বাংলাদেশ যেন আর কোনো ফ্যাসিবাদের মুখে না পড়ে।’

তিনি বলেন, ‘সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত আমাদের কেউ থামাতে পারবে না। আমাদের লক্ষ্য সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা। সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হলে মানুষ আর ব্যাংক লুটপাট করবে না, মানুষ খুন করবে না, মানুষের জিনিসপত্র আত্মসাৎ করবে না। আমরা শিক্ষার উন্নয়ন করতে চাই, মানুষের কল্যাণ করতে চাই, দুর্নীতি বন্ধ করতে চাই। সমাজ নষ্ট করা ইঁদুরদের আমরা তাড়াতে চাই। আপনারা আপনাদের হাত আমাদের জন্য বাড়িয়ে দিন।’

জামায়াত আমীর বলেন, ‘দেশের প্রতিটি মানুষকে সঙ্গে নিয়ে উন্নয়নের লক্ষ্য অর্জন সম্ভব। “যতদিন জামায়াতকে দেশের কল্যাণে দেখবেন, দেশ গড়তে দেখবেন, ততদিন আমাদের পাশে দাঁড়ান। আগামীতে আমাদের একজনও যদি এমপি নির্বাচিত হন, তাদের কেউ সরকারি প্লট নিবে না, বিনা ট্যাক্সের গাড়িতে চড়বে না। জনগণের উপর ট্যাক্স বসানোর জন্য আমাদের ভোট ব্যবহার করা হবে না। আমরা ভালো বললে ভালো বলবেন, ভুল করলে ধরবেন এটাই গণতন্ত্র।’

শফিকুর রহমান অতীতের ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির কথাও স্মরণ করে বলেন, ‘একসময় মানুষ মুখ খুলে কথা বলতে পারতো না, কর্মস্থলে যেতে পারতো না, জীবনের কোনো নিশ্চয়তা ছিল না। গুম হওয়া মানুষগুলো কখনো ফিরে আসবে কি না, তা অনিশ্চিত ছিল। সেই সময় আমাদের কর্মীরা দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়ে দেশের শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষা করেছে।’

তিনি বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থানের পর আমরা বলেছিলাম কারো ক্ষতি করা যাবে না। দেশের তরুণরা দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়েছে। আলহামদুলিল্লাহ, সারাদেশে আমাদের কর্মীরা তা যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করেছে। শুধু আমরা একা এই ভালো কাজ করিনি, অন্যান্য রাজনৈতিক দলও এতে অংশ নিয়েছে। তাদেরও মুবারকবাদ।’

শফিকুর রহমান বলেন, ‘এক সময় জামায়াতকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। অন্য কোনো পার্টিকে এমনভাবে নিষিদ্ধ করা হয়নি, কোনো দলের ওপর হামলা-মামলা বা বাড়িঘর গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়নি। তিনি বলেন, আমরা এখনো বেঁচে আছি, আলহামদুলিল্লাহ। এটাই আল্লাহর ফায়সালা।’

সমাবেশে জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য এডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক ফজলুর রহমান, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য, সিলেট জেলা আমীর মাওলানা হাবিবুর রহমান।

উক্ত সমাবেশে সিলেট জেলা ও মহানগর জামায়াতের বিভিন্ন পর্যায়ের জনশক্তি ছাড়াও বন্ধুপ্রতীম ও সমমনা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, পেশাজীবী ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।