আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ‘নির্ধারকের’ ভূমিকা পালন করবে বলে দাবি করেছেন দলটির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। তিনি বলেন, সারা দেশের ওয়ার্ডভিত্তিক শক্তিশালী সাংগঠনিক কাঠামো গড়ে তোলার মাধ্যমে এনসিপি নির্বাচনে এমন একটি অবস্থানে পৌঁছাবে, যেখান থেকে সংসদে কে যাবে তা নির্ধারণের ক্ষমতা থাকবে তাদের হাতে।
সোমবার (২০ অক্টোবর) দুপুরে জয়পুরহাট জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন সারজিস আলম। এর আগে সকাল ৯টা থেকে সেখানে এনসিপির জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতাকর্মীদের নিয়ে একটি রুদ্ধদ্বার সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে নির্বাচনি প্রস্তুতি এবং সাংগঠনিক পরিকল্পনা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সারজিস আলম বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, আগামীর বাংলাদেশে সংসদে কারা যাবে, তা নির্ধারণে এনসিপির বড় ভূমিকা থাকবে। সরকার গঠনের জন্য সরাসরি ৫০ শতাংশ ভোট পাওয়ার দরকার নেই। যদি দেশে তিনটি উল্লেখযোগ্য রাজনৈতিক শক্তি সক্রিয় থাকে, তাহলে সেই তৃতীয় শক্তিই হয়ে ওঠে ‘কিং-মেকার’। যারা সংখ্যাগরিষ্ঠতার কাছাকাছি থাকে সেই দুই দলের মাঝে যাকে পক্ষে পায়, তারাই সরকার গঠন করে।’
তিনি স্পষ্ট করে বলেন, ‘আমরা পোষা বিরোধী দল হতে আসিনি। আমাদের লক্ষ্য জনগণের প্রকৃত প্রতিনিধি হয়ে সংসদে যাওয়া হয়তো সরকারি দলে, নইলে সত্যিকারের বিরোধী দলে।’
সারজিস আলম বলেন, ‘এনসিপির পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, আগামী দুই মাসের মধ্যে দেশের প্রতিটি ওয়ার্ডে যেন দলের কমিটি গঠিত হয়। ইউনিয়ন, উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে সাংগঠনিক কাঠামো দৃঢ় করার জন্য তিনি মাঠপর্যায়ের নেতাকর্মীদের আহ্বান জানান।’
এনসিপি নেতা বলেন. ‘ভোটের মাঠে কাঠামোই সব। আমরা সেই কাঠামো তৈরি করছি, যা দিয়ে জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণ করা সম্ভব।’
সারজিস আলম বলেন, ‘আমরা কোনো দলীয় স্বার্থে জুলাই সনদে স্বাক্ষর করিনি। জনগণের স্বার্থের প্রতিফলন সেই সনদে ছিল না, কিংবা তার বাস্তবায়নে কোনো আইনি ভিত্তি আমরা পাইনি। কেবল ভোটে যাওয়ার আশ্বাসে বা আসন পাওয়ার লোভে আমরা স্বাক্ষর করতে চাইনি।’
তিনি আরও বলেন,‘সনদে যেসব বিষয়ে ঐক্যমত্য হয়েছে, তা বাস্তবায়নের জন্য রোডম্যাপ এবং সুনির্দিষ্ট আইনি নিশ্চয়তা জরুরি। আমরা জনগণের প্রতিনিধি হয়ে কথা বলছি, দলীয় সুবিধা নেওয়ার জন্য নয়।’
সারজিস আলম আরও বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, জনগণের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিলে তাতে দেশেরও কল্যাণ হয়। এই দর্শনেই এনসিপি এগোচ্ছে। আমরা সরকারে যাই বা না যাই, এমন রাজনীতি করতে চাই, যেখানে জনগণের চাওয়া-পাওয়া গুরুত্বপূর্ণভাবে প্রতিফলিত হবে।’
সমন্বয় সভায় উপস্থিত ছিলেন এনসিপির রাজশাহী বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক ইমরান ইমন, যুগ্ম মুখ্য সংগঠক সাকিব মাহদী, জয়পুরহাট জেলা এনসিপির যুগ্ম সমন্বয়কারী ওমর আলী প্রমুখ।