প্রায় ২ বছর বন্ধ থাকার পরে আবারও নতুন বিদেশি কর্মী নিয়োগের কোটা অনুমোদন পুনরায় চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে মালয়েশিয়া সরকার। তবে তা কেবল নির্দিষ্ট কয়েকটি খাত ও উপখাতের জন্যই প্রযোজ্য হবে।
মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) মানবসম্পদ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যৌথ কমিটির বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফুদ্দিন নাসুশন ইসমাইল এ তথ্য জানান। তবে মালয়েশিয়াতে বাংলাদেশ থেকে কলিং ভিসায় শ্রমিক আনার বিষয়ে এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি একাধিক সূত্রে জানা যায়।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফুদ্দিন নাসুশন ইসমাইল বলেন, ‘কৃষি, বাগান ও খনিসহ তিনটি প্রধান খাত এবং সেবা খাতের ১০টি উপখাতে সীমিত আকারে আবেদন গ্রহণ করা হবে।’ সেবা খাতের অনুমোদিত উপখাতগুলো হলো- পাইকারি ও খুচরা ব্যবসা, গুদামজাতকরণ, নিরাপত্তা সেবা, স্ক্র্যাপ মেটাল, রেস্টুরেন্ট, লন্ড্রি, কার্গো হ্যান্ডলিং এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা সেবা।
নির্মাণ খাতে কেবল সরকারি প্রকল্পের জন্য শ্রমিক আনার অনুমতি দেওয়া হবে। অন্যদিকে, উৎপাদন খাতে কেবল মালয়েশিয়ান ইনভেস্টমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (এমআইডিএ) অনুমোদিত নতুন বিনিয়োগ প্রকল্পগুলোতে বিদেশি শ্রমিক নিয়োগের সুযোগ থাকবে।
আগের মতো যে কেউ কোটার জন্য আবেদন করতে পারবে না উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আগে মালিক, এজেন্ট, যে কেউ আবেদন করতে পারত। এখন থেকে আর নয়। এখন থেকে কেবল নির্দিষ্ট খাত ও উপখাতের পক্ষেই আবেদন করার সুযোগ থাকবে।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফুদ্দিন আরও বলেন, ‘টম, ডিক এবং হ্যারি’ কে কোটার জন্য আবেদন করার অনুমতি দেওয়ার প্রথা আর চলবে না।’
তিনি আরও জানান, প্রত্যেক খাতের নিয়োগ কর্তাকে নিজ নিজ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আবেদন জমা দিতে হবে। যেমন, বাগান খাতের জন্য প্ল্যান্টেশন অ্যান্ড কমোডিটিজ মন্ত্রণালয়, কৃষি খাতের জন্য কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তা মন্ত্রণালয়, এবং রেস্টুরেন্ট খাতের জন্য ডোমেস্টিক ট্রেড অ্যান্ড কস্ট অব লিভিং মন্ত্রণালয়ে আবেদন করতে হবে।
এ আবেদনগুলো যাচাই করবে বিদেশি শ্রমিক ব্যবস্থাপনাবিষয়ক টেকনিক্যাল কমিটি, যেখানে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব জেনারেলরা থাকবেন। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও মানবসম্পদ মন্ত্রীর যৌথ কমিটি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ১৩তম মালয়েশিয়া পরিকল্পনা অনুযায়ী দেশে বিদেশি শ্রমিকের উপস্থিতি সর্বোচ্চ ১০ শতাংশে সীমিত রাখার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। বর্তমানে এ হার ১৫ শতাংশ।
তিনি জানান, ২০২৫ সালে বিদেশি শ্রমিকের সেক্টরভিত্তিক সর্বোচ্চ সংখ্যা নির্ধারণ করা হয়েছে ২৪ লাখ ৬৭ হাজার ৭৫৬। তবে ২০২৬ সালের মধ্যে বিদেশি শ্রমিকের নির্ভরতার এই হার ১০ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্য নিয়েছে সরকার।