ইসলামে জুমার দিনকে বিশেষ মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। এটি মুসলিম উম্মাহর জন্য সাপ্তাহিক ঈদের দিন। আরবি ‘জুমা’ শব্দটি এসেছে ‘জমা’ থেকে, যার অর্থ—একত্র হওয়া। জুমার দিন মুসলমানদের মসজিদে একত্র হয়ে নামাজ আদায়ের মাধ্যমেই এর তাৎপর্য পূর্ণ হয়।
পবিত্র কোরআনে জুমার গুরুত্বের কথা উল্লেখ করে বলা হয়েছে—‘হে ইমানদারগণ! যখন জুমার দিনে নামাজের জন্য আহ্বান করা হয়, তখন আল্লাহর স্মরণে ধাবিত হও এবং ক্রয়-বিক্রয় ত্যাগ কর। এটাই তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা বুঝতে পারো।’ (সুরা জুমা, আয়াত: ৯)
জুমার দিন সম্পর্কে একটি স্বতন্ত্র সূরাও রয়েছে—সুরা জুমা। এর আগের সূরা হলো সুরা সফ, যার অর্থ সারিবদ্ধতা বা কাতার। মুসলিমদের জুমার নামাজে শৃঙ্খলা ও ঐক্যের প্রতিফলন ঘটে এই সারিবদ্ধতায়।
হাদিসে বর্ণিত জুমার দিনের ১২টি সুন্নাত
হজরত মুহাম্মদ (সা.) জুমার দিনে কিছু গুরুত্বপূর্ণ আমল পালনের তাগিদ দিয়েছেন, যা মুসলিমদের জন্য বরকত ও গুনাহ মাফের ওসিলা:
১. গোসল করা – (বুখারি: ৮৭৭)
২. মিসওয়াক করা – (ইবনে মাজাহ: ১০৯৮)
৩. পরিচ্ছন্ন ও ভালো পোশাক পরা – (আবু দাউদ: ৩৪৩)
৪. সুগন্ধি ব্যবহার করা – (বুখারি: ৮৮০)
৫. মসজিদে প্রবেশের পর কারো গায়ের ওপর দিয়ে বা ফাঁক করে সামনে না যাওয়া – (বুখারি: ৯১০, ৮৮৩)
৬. কাউকে উঠিয়ে দিয়ে সেখানে বসার চেষ্টা না করা – (বুখারি: ৯১১)
৭. একটি নির্দিষ্ট স্থানে বসতে না গিয়ে খালি জায়গায় বসা – (আবু দাউদ: ৮৬২)
৮. ফরজ নামাজের আগে ও পরে সুন্নত ও নফল নামাজ আদায় করা – (বুখারি: ৯৩০)
৯. পায়ে হেঁটে মসজিদে যাওয়া – (মুসলিম: ১৪০০)
১০. ইমামের কাছাকাছি বসা – (আবু দাউদ: ১১০৮)
১১. খুতবার সময় পুরোপুরি নীরব থাকা – কাউকে চুপ করানোর চেষ্টাও না করা – (আবু দাউদ: ১১১২)
১২. ইমামের খুতবা শুরু থেকে নামাজ শেষ হওয়া পর্যন্ত মনোযোগ ধরে রাখা – (আবু দাউদ: ৩৪৩)