ঢাকা শনিবার, ০৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

ঈদে মিলাদুন্নবীর তাৎপর্য কী, যা করবেন এই দিনে

ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৬, ২০২৫, ১১:১৩ এএম
মসজিদে নববী। ছবি- সংগৃহীত

আজ ১২ রবিউল আউয়াল- এই দিনটি মুসলিম উম্মাহর কাছে এক পবিত্র ও মহিমান্বিত দিন। কারণ, এই দিনে বিশ্বমানবতার মুক্তিদূত, ইসলামের শেষ নবী, মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জন্ম ও ওফাত ঘটে। দিনটিকে মুসলিমরা যথাযোগ্য মর্যাদায় ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) হিসেবে পালন করে থাকে।

প্রায় এক হাজার চারশত বছর আগে, এই দিনে আরবের মরুপ্রান্তরে, মা আমিনার কোলজুড়ে এসেছিলেন সেই মহামানব, যিনি পরবর্তীতে হয়ে উঠেন মানব জাতির আদর্শ ও পথপ্রদর্শক। আবার, এই একই দিনে তিনি পৃথিবী থেকে বিদায়ও নেন। তাই দিনটি একই  সঙ্গে আনন্দ ও বেদনার স্মৃতি বহন করে।

অন্ধকার যুগে আলোর প্রদীপ

নবীজির আগমনের আগে গোটা আরব সমাজ এক গভীর অন্ধকারে নিমজ্জিত ছিল। মানুষ আল্লাহর ইবাদত ভুলে গিয়ে মূর্তিপূজা, হানাহানি, অশ্লীলতা ও বিভ্রান্তির মধ্যে বাস করছিল। এই সময়টিকে ইসলামী পরিভাষায় বলা হয় আইয়ামে জাহেলিয়াত বা অজ্ঞতার যুগ।

এই নৈরাজ্য ও অন্ধকার থেকে মানবজাতিকে মুক্তি দিতে আল্লাহ তাআলা তাঁর প্রিয় হাবিব হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে পৃথিবীতে প্রেরণ করেন। তিনি ছিলেন সেই মহান আলোকবর্তিকা, যার মাধ্যমে মানুষ ফিরে পায় ন্যায়ের পথ, আল্লাহর পরিচয়, এবং মানবিকতা ও শান্তির শিক্ষা।

নবীজির জীবনের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা

অতি অল্প বয়সেই হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর মধ্যে পরিপক্বতা, সততা ও ধ্যানমগ্নতা দেখা দেয়। তিনি প্রায়ই মক্কার বাইরে হেরা পর্বতের গুহায় ধ্যান করতেন এবং আল্লাহর সান্নিধ্য কামনা করতেন।

২৫ বছর বয়সে, তিনি একজন সম্মানিত ও ধনাঢ্য নারী, বিবি খাদিজা (রা.)-এর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। এরপর ৪০ বছর বয়সে তিনি নবুয়তপ্রাপ্ত হন, এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে নবুওয়তের দায়িত্ব লাভ করেন। এর মাধ্যমে শুরু হয় মানবজাতির ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায়।

ঈদে মিলাদুন্নবী তাৎপর্য ও মুসলমানদের করণীয়

পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘আপনাকে (হে নবী) না পাঠালে আমি এ পৃথিবী সৃষ্টি করতাম না।’ এই আয়াত থেকেই বোঝা যায়, বিশ্বনবীর আগমন পৃথিবীর জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল।

এই পবিত্র দিনে একজন মুসলমানের কর্তব্য হলো- আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ ও ইবাদতে মগ্ন থাকা। নবীজির জন্ম উপলক্ষে খুশি প্রকাশ ও মৃত্যু উপলক্ষে শোক প্রকাশ। নবী করিম (সা.)-এর প্রতি গভীর ভালোবাসা পোষণ করা। তার আদর্শ ও সুন্নাহ অনুসরণ করে জীবন পরিচালনা করা। তার জীবন ও চরিত্র নিয়ে আলোচনা করা ও তা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করা।