ঢাকা মঙ্গলবার, ০৫ আগস্ট, ২০২৫

ঋণ পরিশোধ না করলে কি হয়

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: আগস্ট ৫, ২০২৫, ০৫:৫৮ এএম
ঋণ পরিশোধ না করলে কি হয়। ছবি- সংগৃহীত

মানুষের জীবনে চাহিদা ও সংকটের এক অনিবার্য বাস্তবতা হলো ঋণ। প্রয়োজনের মুহূর্তে মানুষ কখনো না কখনো ঋণ গ্রহণ করে থাকে। ইসলামে এ বিষয়টি খুবই গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হয়েছে-একদিকে যেমন ঋণ প্রদানকে উৎসাহিত করা হয়েছে, অপরদিকে ঋণগ্রহীতাকে যথাসময়ে ঋণ পরিশোধের তাগিদ দেওয়া হয়েছে।

পবিত্র কোরআন ও হাদিসে বিপদগ্রস্তের পাশে দাঁড়ানো এবং প্রয়োজনকালে সহযোগিতা করার গুরুত্ব অপরিসীম। এক মুসলমান যখন আরেক মুসলমানকে ঋণ দিয়ে সহযোগিতা করে, তখন সে আল্লাহর সন্তুষ্টির একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ সম্পাদন করে। এই কাজটি সাদকার চেয়েও উত্তম বলেও হাদিসে উল্লেখ রয়েছে।

ঋণ নেওয়ার পর তা যথাসময়ে পরিশোধ করা শুধু নৈতিক দায়িত্ব নয়, বরং এটি ইসলামে একটি বাধ্যতামূলক কর্তব্য। এটি ঋণগ্রহীতার ওপর ঋণদাতার অধিকার। হাদিসে বলা হয়েছে-যে ব্যক্তি পরিশোধ করার নিয়তে ঋণ নেয়, আল্লাহ তার পক্ষ থেকে ঋণ পরিশোধ করে দেন। (সহিহ বোখারি: ২৩৮৭)

এমনকি কেউ মারা গেলে তার সম্পদ থেকে প্রথমেই ঋণ পরিশোধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এরপরই আসে ওয়ারিশদের মধ্যে সম্পদ বণ্টনের বিষয়।

যারা সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও ইচ্ছাকৃতভাবে ঋণ পরিশোধে বিলম্ব করে, তাদের জন্য কঠোর হুঁশিয়ারি এসেছে হাদিসে। রাসূল (সা.) বলেছেন, সচ্ছল ব্যক্তির টালবাহানা করা জুলুম। (সহিহ বোখারি: ২৪০০)

ঋণদাতা যখন পাওনা ফেরত চাইবে, তখন তাকে যেন নরম ভাষায় ও সহনশীলভাবে তাগাদা করতে হয়। অপরদিকে ঋণগ্রহীতার উচিত কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা এবং সময়মতো পরিশোধ না করতে পারলে বিনয়ের সঙ্গে সময় চাওয়া। কঠিন সময়ে ধৈর্য ও শালীন আচরণই ইসলামের শিক্ষা।

না, যদি বাড়িয়ে দেওয়ার কোনো পূর্বশর্ত না থাকে, তাহলে তা সুদ নয় বরং কৃতজ্ঞতা ও সদাচরণের বহিঃপ্রকাশ। প্রিয় নবীজি (সা.) নিজেও ফেরতের সময় বাড়তি দিয়ে দিতেন। সাহাবি হজরত জাবের (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূল (সা.) আমার কাছে ঋণ নিয়েছিলেন এবং পরে আমাকে আমার পাওনার চেয়ে বেশি দিয়েছিলেন। (আবু দাউদ: ৩৩৪৯)

হজরত রাসূল (সা.) দোয়ার মাধ্যমে আল্লাহর কাছে চেয়েছেন যেন তিনি হালাল উপায়ে আমাদের চাহিদা পূরণ করেন এবং অন্য কারও মুখাপেক্ষী না হতে হয়-

দোয়া:
اللَّهُمَّ اكْفِنِي بِحَلاَلِكَ عَنْ حَرَامِكَ ، وَأَغْنِنِي بِفَضْلِكَ عَمَّنْ سِوَاكَ
অর্থ: হে আল্লাহ! আপনি আপনার হালাল বিষয় দিয়ে আমাকে হারাম থেকে রক্ষা করুন এবং আপনার অনুগ্রহে আমাকে অন্যদের মুখাপেক্ষী হওয়া থেকে মুক্ত রাখুন।
(তিরমিজি: ৩৫৬৩)