ঢাকা শুক্রবার, ১৪ নভেম্বর, ২০২৫

বাজার মূলধন কমেছে ৭৯৩৬ কোটি টাকা

শেয়ারবাজারে ঢালাও দরপতন

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: নভেম্বর ১৪, ২০২৫, ০২:০১ এএম

সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস গতকাল বৃহস্পতিবার দেশের শেয়ারবাজারে ঢালাও দরপতন হয়েছে। এতে এক দিনেই প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান মূল্যসূচক ১২২ পয়েন্ট কমে গেছে। আর বাজার মূলধন কমেছে ৭ হাজার ৯৩৬ কোটি টাকার বেশি। তবে লেনদেন কিছুটা বেড়েছে। অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) ঢালাও দরপতন হয়েছে। দাম বাড়ার তুলনায় দাম কমার তালিকায় ছয় গুণ বেশি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট থাকায় মূল্যসূচকের বড় পতন হয়েছে। সেই সঙ্গে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। এর মাধ্যমে সিএসইতে টানা ১০ কার্যদিবস মূল্যসূচক কমল।

এদিন ডিএসইতে লেনদেন শুরু হওয়ার পাঁচ মিনিটের মধ্যে দাম কমার তালিকায় চলে আসে বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠান। লেনদেনের সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে দরপতনের মাত্রাও বাড়তে থাকে। ফলে ঢালাও দরপতনের সঙ্গে মূল্যসূচকের বড় পতন দিয়েই দিনের লেনদেন শেষ হয়। দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে সব খাত মিলে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে মাত্র ১৫টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ৩৫২টির আর ১৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

ভালো কোম্পানি বা ১০ শতাংশ অথবা তার বেশি লভ্যাংশ দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ১১টির শেয়ারের দাম বেড়েছে। বিপরীতে ১৮৮টির দাম কমেছে এবং ১০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। মাঝারি মানের বা ১০ শতাংশের কম লভ্যাংশ দেওয়া একটি কোম্পানিরও শেয়ারের দাম বাড়েনি। বিপরীতে ৭৭টির দাম কমেছে এবং দুটির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ না দেওয়ার কারণে ‘জেড’ গ্রুপে স্থান হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে চারটির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৮৭টির এবং পাঁচটি কোম্পানির শেয়ারের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। আর ৩৫টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে একটির দাম বেড়েছে। বিপরীতে ২৮টির দাম কমেছে এবং ছয়টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

এতে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ১২২ পয়েন্ট কমে ৪ হাজার ৭০২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক ২৮ পয়েন্ট কমে ৯৭৬ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৪৭ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৮৫১ পয়েন্টে নেমে গেছে।

এমন দরপতনের ফলে ডিএসইর বাজার মূলধন ৭ হাজার ৯৩৬ কোটি ১১ লাখ টাকা কমে গেছে। আগের দিন ডিএসইর বাজার মূলধন ছিল ৬ লাখ ৮১ হাজার ৯১০ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। এখন তা কমে ৬ লাখ ৭৩ হাজার ৯৭৪ কোটি ৫৪ লাখ টাকায় দাঁড়িয়েছে। সব কটি মূল্যসূচক কমলেও ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ কিছুটা বেড়েছে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৩৮৩ কোটি ৩৪ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ২৯০ কোটি ১৩ টাকা। এ হিসাবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন বেড়েছে ৯৩ কোটি ২১ লাখ টাকা। এই লেনদেনে সব থেকে বড় ভূমিকা রেখেছে সামিট অ্যালায়েন্স পোর্টের শেয়ার। কোম্পানিটির ১৮ কোটি ৬২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১২ কোটি ৬৪ লাখ টাকার। ১১ কোটি ৫৬ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন।

এ ছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছেÑ আনোয়ার গ্যালভানাইজিং, রবি, সিমটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ, শাহজিবাজার পাওয়ার, লাভেলো আইসক্রিম, মনোস্পুল পেপার ও সিটি ব্যাংক।

অন্য শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ২১৬ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৬০ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২০টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৩৬টির এবং চারটির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৭ কোটি ২২ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৯ কোটি ৮০ লাখ টাকা।