মিরপুরের শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের স্পিন-সহায়ক উইকেটে রান তুলতে বাংলাদেশের ব্যাটারদের যখন রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছিল, ঠিক তখনই যেন ত্রাতা হয়ে এলেন রিশাদ হোসেন।
শেষদিকে ব্যাট হাতে নেমে এই তরুণ ক্রিকেটার দেখালেন টি-টোয়েন্টি সুলভ ব্যাটিংয়ের ঝলক। নবম উইকেটে নেমে মাত্র ১৪ বলে ৩৯ রানের এক ঝোড়ো ইনিংস খেলেছেন তিনি, যা বাংলাদেশকে এনে দিয়েছে সম্মানজনক পুঁজি। এই ইনিংসে রিশাদ ভাঙলেন মাশরাফি বিন মর্তুজা ও সাকিব আল হাসানের দীর্ঘদিনের রেকর্ডও।
উইকেটে থিতু হয়েও সৌম্য সরকার বা মেহেদী হাসান মিরাজের মতো সেট ব্যাটাররা যখন গিয়ার পরিবর্তন করতে পারছিলেন না, তখন রিশাদ দেখালেন তার আগ্রাসী মেজাজ।
তার ১৪ বলের ইনিংসে ছিল সমান তিনটি করে চার ও ছক্কা। অবিশ্বাস্যভাবে তার স্ট্রাইক রেট ছিল প্রায় ২৭৮, যা বাংলাদেশের ওয়ানডে ক্রিকেটে এক নতুন রেকর্ড।
দেশের হয়ে অন্তত ১০ বল খেলা ইনিংসে এটিই এখন সর্বোচ্চ স্ট্রাইক রেটে ব্যাটিংয়ের রেকর্ড। এর আগে এই রেকর্ডটি যৌথভাবে ছিল সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা ও বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের দখলে।
২০০৬ সালে কেনিয়ার বিপক্ষে মাশরাফি ১৬ বলে ২৭৫ স্ট্রাইক রেটে করেছিলেন ২৭৫ রান। অন্যদিকে, ২০১৪ সালের এশিয়া কাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে সাকিব আল হাসানও একই ১৬ বলে ২৭৫ স্ট্রাইক রেটে করেছিলেন ৪৪ রান। আজ রিশাদ এই দুই কিংবদন্তিকে ছাড়িয়ে নিজের নাম লেখালেন রেকর্ডের পাতায়।
৪৬তম ওভারে যখন নুরুল হাসান সোহান ফেরেন, তখন দলের স্কোর ছিল মাত্র ১৬৩। এমন অবস্থায় দুইশ রানের গন্ডি পেরোনো কঠিন মনে হচ্ছিল। কিন্তু রিশাদ হোসেনের ব্যাটিং তাণ্ডবে সেই পথটা সহজেই পাড়ি দেয় বাংলাদেশ।
এক প্রান্তে মিরাজ (৫৮ বলে ৩২) দায়িত্বশীল ব্যাটিং করলেও অন্য প্রান্তে রিশাদ তার ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে দর্শকদের মনোরঞ্জন করেন। তার অপরাজিত ৩৯ রানের ইনিংসে ভর করে বাংলাদেশ একটি লড়াকু পুঁজি গড়তে সক্ষম হয়।