জয়-পরাজয় বড় কথা নয়, মূল কথা হলো ভালো খেলা। আর সেই ভালো খেলার পুরস্কার যদি হয় ১০০টা ডিম, ২০ লিটার দুধ আর ৪০ ব্যাগ ওটমিল? শুনে অবাক লাগলেও এমনই এক বাস্তব দৃশ্য সম্প্রতি দেখা গেছে নরওয়ের একটি ফুটবল মাঠে।
নরওয়ের ছোট্ট শহর ব্রাইনের ফুটবল ক্লাব ব্রাইন এফকে হারলেও হার মানেনি অভিনবত্বে। নরওয়েজিয়ান শীর্ষ লিগে ভাইকিং এফসির কাছে ১-৩ গোলে হারার পরও ক্লাবটি নিজেরাই নির্বাচন করেছে ম্যাচসেরা ফুটবলার।
২১ বছর বয়সি লেফট-ব্যাক লাসে কভিগস্টাদ দলের একমাত্র গোলটি করে পেয়েছেন এই বিশেষ স্বীকৃতি।
তবে সেই স্বীকৃতির স্মারক হিসেবে কোনো ট্রফি, মেডেল বা স্পনসরের লোগো-মার্কা পাইপ নয়—তার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে ১০০ ডিম, ২০ লিটার দুধ আর ৪০ ব্যাগ ওটমিল!
ব্রাইন শহরটি কৃষি সম্প্রদায় ঘেরা, জনসংখ্যা মাত্র ১৩ হাজার। এখানকার মানুষের জীবনে যেমন আছে মাঠের ঘামের গন্ধ, তেমনি ফুটবলে আছে আন্তরিকতা আর লোকজ গর্ব।
ক্লাবটির মার্কেটিং ম্যানেজার বিয়র্ন হাগেরুপ রুকেন কিছুদিন আগে রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য হলো স্থানীয় কৃষক পরিচয়কে সামনে আনা এবং ক্লাব ও এলাকার মধ্যে গর্ব সৃষ্টি করা।’
এ গর্ব ফুটে উঠছে মাঠেও। ম্যাচের ভিআইপি গ্যালারিতে সোফা রাখা হয়, যেটা ট্র্যাক্টরের মাধ্যমে তুলে দেওয়া হয় ওপরে! মাঠের পাশে রাখা শস্য মজুদের সাইলো ব্যবহার হচ্ছে ভিএআর ক্যামেরার স্ট্যান্ড হিসেবে।
আর কেউ চাইলে নিজস্ব ট্র্যাক্টর নিয়ে মাঠের পাশে এসে বসেই খেলা দেখতে পারেন—দৃশ্যটা যেন গ্রামীণ মেলার মতো প্রাণবন্ত।
সোশ্যাল মিডিয়ায় এই অভিনব উদ্যোগ বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছে। একজন দর্শক লেখেন, নরওয়ের বাজারে এত দামি খাদ্যসামগ্রী—আমি তো যেকোনো দিন নিতে রাজি!
আরেকজন রসিকতা করে লেখেন, স্পনসরের লোগো লাগানো প্লাস্টিকের পাইপের চেয়ে এটা অনেক ভালো পুরস্কার!
তাদের মতে, এটা শুধু পুরস্কার নয়—একটি বার্তা। খেলোয়াড়রা যা পান, তা শুধু দেখানোর জন্য নয়, বরং বাস্তব জীবনে কাজে লাগার মতো কিছু।