ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই, ২০২৫

শতাব্দীর বিধ্বংসী ঝড় নিয়ে ভয়াবহ তথ্য প্রকাশ

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: জুলাই ১৭, ২০২৫, ০১:৪৩ এএম
স্টর্ম অব দ্য সেঞ্চুরি ঘণ্টায় ১০০ মাইলের বেশি গতির ঝড়ো বাতাস নিয়ে তাণ্ডব চালায়। ছবি- সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব উপকূলে ভয়াবহ তুষারপাত, বৃষ্টি ও বন্যা নিয়ে আছড়ে পড়া সবচেয়ে বিধ্বংসী নর’ইস্টার ঝড়গুলো জলবায়ু দূষণের প্রভাবে আরও বেশি প্রলয়ঙ্করী হয়ে উঠছে, এমনটাই জানিয়েছে একটি নতুন গবেষণা। নর’ইস্টার ঝড় সাধারণত সেপ্টেম্বর থেকে এপ্রিলের মধ্যে সৃষ্টি হয় এবং এগুলো জন্ম নেয় উত্তরের ঠান্ডা আর্কটিক বাতাস ও আটলান্টিক মহাসাগরের উষ্ণ ও আর্দ্র বাতাসের মধ্যে তাপমাত্রার পার্থক্যের ফলে। এই ধরনের ঝড়গুলো যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব উপকূলের ঘনবসতিপূর্ণ শহরগুলোর জন্য বিশাল হুমকি।‌ 

১৯৯৩ সালে ‘স্টর্ম অব দ্য সেঞ্চুরি’ নামে পরিচিত শতাব্দীর ভয়াবহতম ঝড়ে ঘণ্টায় ১০০ মাইলের বেশি গতির ঝোড়ো বাতাস বয়ে যায়। কোথাও কোথাও ৬০ ইঞ্চি পর্যন্ত তুষারপাত হয় এবং প্রাণ হারান দুই শতাধিক মানুষ।

পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জলবায়ু বিজ্ঞানী মাইকেল মান জানান, ১৯৯৩ সালের সেই ঝড়ের সময় তিনি একটি হোটেল রুমে তিন দিন আটকে পড়েছিলেন। এই অভিজ্ঞতা থেকেই তার মনে প্রশ্ন জাগে, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে এই ঝড়গুলোর আচরণ কীভাবে বদলাচ্ছে?

গবেষকরা ১৯৪০ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত সময়কালের ৯০০টি নর’ইস্টার ঝড় বিশ্লেষণ করেছেন। এতে একটি বিশেষ সাইক্লোন ট্র্যাকিং অ্যালগরিদম ব্যবহার করা হয়।

গবেষণায় বলা হয়েছে, ১৯৪০ সালের তুলনায় সবচেয়ে শক্তিশালী নর’ইস্টার ঝড়গুলোর গড় সর্বোচ্চ বাতাসের গতি প্রায় ৬ শতাংশ বেড়েছে, যা ঝড়ের ধ্বংসক্ষমতা প্রায় ২০ শতাংশ বাড়িয়ে দিয়েছে।

গবেষণায় আরও বলা হয়েছে, উষ্ণ পৃথিবীতে নর’ইস্টার ঝড়ের সংখ্যা হয়তো কমে যাবে। কারণ আর্কটিক অঞ্চলের উষ্ণতা বৃদ্ধি পাওয়ায় ঠান্ডা ও উষ্ণ বাতাসের মধ্যকার পার্থক্য কমে আসছে, যা এই ঝড় তৈরির প্রধান উপাদান। তবে ঝড়ের সংখ্যা কমলেও যেগুলো সৃষ্টি হবে, সেগুলো আরও তীব্র এবং বিধ্বংসী হবে। এটি জলবায়ু পরিবর্তনের একটি ভয়ংকর এবং স্পষ্ট প্রভাব বলে গবেষকরা উল্লেখ করেছেন।