ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০১ মে, ২০২৫

মমতা-দিলীপের ছবি নিয়ে অস্বস্তি

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: মে ১, ২০২৫, ০৩:৫০ পিএম
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমন্ত্রণে দিঘার জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধনে উপস্থিত ছিলেন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ। ছবি : সংগৃহীত

রাজ্য সরকারের আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে পশ্চিম মেদিনীপুরের প্রাক্তন সাংসদ ও ভারতীয় জনতা দলের প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ উপস্থিত হয়েছেন দিঘার জগন্নাথ ধামের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুধবার (৩০ এপ্রিল) দুপুরে এই মন্দিরের দ্বারোদ্ঘাটন করেন। সন্ধ্যার দিকে সেখানে পৌঁছান দিলীপ। তবে একই দিনে বিরোধীদল নেতা শুভেন্দু অধিকারীর ডাকা ‘সনাতনী সমাবেশ’-এ উপস্থিত না হয়ে দিলীপের সরাসরি দিঘা যাওয়ায় তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক গরমিল। গেরুয়া শিবিরের অভ্যন্তরেও দেখা দিয়েছে অস্বস্তি।

অক্ষয়তৃতীয়া উপলক্ষে ধর্মীয় পরিপ্রেক্ষিতে মুখ্যমন্ত্রীর এ উদ্যোগে দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘দিনটি শুভদিন। পূজা-অর্চনা ও ধর্মীয় কার্যকলাপে যুক্ত থাকাই স্বাভাবিক।’

তিনি বলেন, ‘মন্দির প্রতিষ্ঠা হিন্দু জাগরণের অংশ- এ উপলক্ষে আমাকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। আমি কেন যাব না?’

তিনি রসিকতা করে বলেন, ‘ভগবান সাড়ে তিন শ কিলোমিটার দূর থেকে আমাদের সঙ্গে দেখা করতে এসেছেন। আমি কি দুই শ কিলোমিটার গিয়ে তার সঙ্গে দেখা করতে পারব না?’

যেখানে শুভেন্দু অধিকারী কাঁথিতে সরকারের কর্মসূচির বিরুদ্ধে পাল্টা সমাবেশ আয়োজন করেন এবং কলকাতা উচ্চ আদালতের অনুমতি নিয়ে সেই কর্মসূচি পালন করেন, সেখানে দিলীপ ঘোষ ওই পথ পেরিয়ে সোজা চলে যান দিঘার দিকে।

এ নিয়ে শুভেন্দু কোনো মন্তব্য না করলেও, রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে দিলীপ ঘোষের এই পদক্ষেপ রাজ্য বিজেপির অভ্যন্তরীণ বিভাজনের ইঙ্গিত দেয়।

দিলীপ স্পষ্টভাবে বলেন, ‘আমাকে কাঁথিতে কেউ আমন্ত্রণ করেননি। আমি যেখানে আমন্ত্রণ পেয়েছি- শ্যামপুর, দিঘা- সেখানেই গিয়েছি। অক্ষয়তৃতীয়ায় অনেক অনুষ্ঠান হয়, সব জায়গায় যাওয়া সম্ভব নয়।’

এদিকে, দিলীপের দিঘা যাওয়া এবং মুখ্যমন্ত্রীর মঞ্চে উপস্থিত না হলেও একই মন্দির পরিদর্শনে যাওয়ার ঘটনায় রাজনৈতিক মহলে নানা প্রশ্ন উঠেছে।

যদিও বিজেপির একাংশ এ পদক্ষেপকে ‘ধর্মীয় সফর’ বলে ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করছে, কিন্তু দিলীপের মুখ্যমন্ত্রীর হিন্দু ভাবনায় সহমত প্রকাশ- একাধিক মহলে গেরুয়া দলের কৌশলগত অবস্থান বিতর্ক উসকে দিয়েছে।

বলা হচ্ছে, মুখ্যমন্ত্রীর ‘সর্বধর্ম সমন্বয়’ বার্তা এবং হিন্দু ধর্মীয় অনুভূতির সঙ্গে যুক্ত এমন কর্মসূচিতে নিজেকে যুক্ত রেখে দিলীপ একদিকে যেমন জনমানসে নিজের ধর্মীয় ভাবমূর্তি জোরদার করছেন, তেমনি দলের ভেতর শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বাধীন বিরোধিতার রাজনৈতিক ভারসাম্যও রক্ষা করছেন।