ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৮ মে, ২০২৫

পাক-ভারত যুদ্ধ নিয়ে ‘গবেষণা’ নিছক ভবিষ্যদ্বাণী না কি পরিকল্পিত?

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: মে ৭, ২০২৫, ০৪:০১ পিএম
প্রতীকী ছবি

বেশ কিছুদিন ধরে পাকিস্তান-ভারত সীমান্তে চলমান অস্থিরতার মধ্যেই পাক-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে ভারতের আকস্মিক বিমান হামলার জেরে আবারও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে দুই দেশের সীমান্ত। 

মঙ্গলবার (৬ মে) মধ্যরাতে পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে একাধিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালায় ভারতীয় বাহিনী।

পাল্টা জবাবে পাকিস্তান সেনাবাহিনী রাফালসহ ভারতীয় ছয়টি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার দাবি করেছে। 

পাকিস্তান সেনাবাহিনী দাবি করেছে, হামলায় অংশ নেওয়া ভারতের পাঁচটি যুদ্ধ বিমান ভূপাতিত করেছে তারা। এর মধ্যে তিনটিই রাফাল যুদ্ধবিমান।

কাশ্মীরে ভারতীয় সেনাবাহিনীর একটি ব্রিগেডের সদরদপ্তর ও তল্লাশি চৌকি গুঁড়িয়ে দেওয়ার দাবিও করেছে তারা।

ভারতের এ ক্ষেপণাস্ত্র হামলাকে ‘কাপুরুষোচিত’ আখ্যায়িত করে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ প্রতিটি হামলার সমুচিত জবাব দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

এ সংঘর্ষের মধ্যেই আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নতুন করে আলোচনায় এসেছে প্রায় অর্ধযুগ আগে যুক্তরাষ্ট্রের রাটগার্স বিশ্ববিদ্যালয়ের করা একটি গবেষণা।

সে গবেষণায় ২০২৫ সালেই ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে একটি সম্ভাব্য পারমাণবিক যুদ্ধের আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছিল।

এখন প্রশ্ন উঠছে- এ গবেষণা নিছক ভবিষ্যদ্বাণী ছিল, না কি এটি কোনো পূর্বপরিকল্পিত কৌশলের ইঙ্গিত?

রাটগার্স বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় বলা হয়েছিল, কাশ্মীর ইস্যুকে কেন্দ্র করে দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হলে তাৎক্ষণিকভাবে প্রাণহানির সংখ্যা পৌঁছাতে পারে প্রায় ১২ কোটি ৫০ লাখে।

শুধু তাই নয়, যুদ্ধ-পরবর্তী পরিবেশগত বিপর্যয়ের কারণে অনাহারে মারা যেতে পারে আরও বহু কোটি মানুষ।

সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয় হলো, গবেষণায় ২০২৫ সালকে সম্ভাব্য যুদ্ধের সময়সীমা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল। দেখা যাচ্ছে, বাস্তব সংঘাতের ঝুঁকিও ঠিক সেই বছরেই সামনে এসেছে।

বিশ্লেষকদের মতে, এ ধরনের সময় মিলে যাওয়া ঘটনাপ্রবাহ নিছক কাকতালীয় না কি এর পেছনে রয়েছে সুপরিকল্পিত কোনো কূটনৈতিক বা সামরিক চিত্রনাট্য, তাই এখন বড় প্রশ্ন।

এ প্রসঙ্গে ২০১৯ সালে বিবিসি বাংলার একটি বিশেষ প্রতিবেদনের কথা বলতে হয়, যেখানে সেই গবেষণার ভিত্তিতে যুদ্ধের সম্ভাব্য ‘সিনারিও’ বা কাল্পনিক যুদ্ধচিত্র তুলে ধরা হয়েছিল।

প্রায় ছয় বছর পর, সেই ‘কাল্পনিক’ দৃশ্য আশঙ্কাজনকভাবে বাস্তবের কাছাকাছি চলে এসেছে বলেই মনে করছেন অনেক নিরাপত্তা বিশ্লেষক।

বর্তমান যুদ্ধ-পরিস্থিতি এবং অতীতের গবেষণার অদ্ভুত মিল আন্তর্জাতিক মহলে প্রশ্ন তুলেছে, পাক-ভারত যুদ্ধ কি শুধুই গবেষকদের শঙ্কা ছিল, না কি এটি ছিল সুপরিকল্পিত বাস্তবতার একটি পূর্বাভাস?