ঢাকা রবিবার, ০৪ মে, ২০২৫

এস আলমের চেয়েও বড় দুর্নীতিবাজ তার জামাতা! 

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: মে ৪, ২০২৫, ১২:০৮ পিএম
এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলমের জামাতা বেলাল আহমেদ। ছবি- সংগৃহীত

চট্টগ্রামভিত্তিক শিল্পগ্রুপ ইউনিটেক্স প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করতেন মো. হানিফ চৌধুরী। তবে ব্যবসায়ের প্রয়োজনে কয়েকটি ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছিলেন তিনি। ২০১০ সাল থেকে হানিফ চৌধুরীর ছেলে বেলাল আহমেদের সঙ্গে এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম মাসুদের মেয়ের বিয়ের পর ব্যাংকিং খাতে ইউনিটেক্সের আধিপত্য শুরু হয়।

এরপর ইসলামী ব্যাংকে এস আলমের মালিকানা প্রতিষ্ঠার পর ব্যাংকটি থেকে ৩ হাজার ৭৪৫ কোটি টাকা লোপাট করেছে গ্রুপটি। এ ছাড়াও রূপালী ব্যাংক থেকে ৩২৬ কোটি, ফার্স্ট সিকিউরিটি ৪৭ কোটি এবং এক্সিম ব্যাংকের ৪০ কোটি মিলিয়ে গ্রুপটির মোট ঋণের পরিমাণ ৪ হাজার ১৫৮ কোটি টাকা।

তবে ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকারের পতনের পর গা ঢাকা দিয়েছেন এস আলম ও ইউনিটেক্স পরিবার।

এরপর থেকে বাড়তে থাকে গ্রুপটির প্রদেয় ঋণের পরিমাণ। ইতোমধ্যে খেলাপি ঋণে পরিণত হয়েছে ইসলামী ব্যাংকের দেওয়া ৩ হাজার ৭৪৫ কোটি টাকা। 

ইসলামী ব্যাংকের কর্মকর্তারা সংবাদমাধ্যমকে জানান, ঋণের টাকা উদ্ধারের জন্য তারা গ্রুপটির বন্ধক রাখা স্থাপনা ও সম্পত্তি (৬২ দশমিক ৭৫ একর) নিলামে তুলেছে। তবুও এই সম্পদ বিক্রি করে ঋণের ২ শতাংশ (৮৩ কোটি) টাকাও উদ্ধার হবে না।

তারা আরও জানান, শ্বশুরের প্রভাব খাটিয়ে বেলাল আহমেদ ইসলামী ব্যাংক থেকে এই ঋণ হাতিয়ে নেন। ঋণ বিতরণে কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা করা হয়নি। ঋণের তুলনায় বন্ধকি সম্পত্তি খুবই অপ্রতুল। তাই ঋণের টাকা আদায়ে বড় ঝুঁকিতে রয়েছে ব্যাংক।

এ ছাড়াও ইউনিটেক্স স্টিলের নামেও ৮১৪ কোটি টাকা নেওয়া হয়েছে  ইসলামী ব্যাংকের পাহাড়তলী শাখা থেকে। এ শাখার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেন, ২০২২ সালে ইউনিটেক্স স্টিলের ঋণ অনুমোদন হয়। তবে ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত হিসাব অনুযায়ী, প্রতিষ্ঠানটির কাছে ৩৮৮ কোটি ৫০ লাখ ফান্ডেড এবং ৩০০ কোটি টাকার নন-ফান্ডেড (যন্ত্রপাতি আমদানির ঋণপত্র) অর্থাৎ ৪২৬ কোটি টাকার দায় তৈরি হয়েছে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, ৮১৪ কোটি টাকা ঋণ নিলেও ইউনিটেক্স স্টিল এখনো একটি কাগুজে প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানের নামে ফেনীর ছাগলনাইয়ায় ১৮৮০ শতক জমি কেনা হলেও এখনো কোনো কারখানা গড়ে ওঠেনি সেখানে। 

ব্যাংকটির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা সংবাদমাধ্যমকে জানান, এই ঋণের বিপরীতে ওই জমিগুলোই কোলাটারেল (বন্ধক) দেওয়া হয়েছে ব্যাংকে, যা বিক্রি করে সর্বোচ্চ ২৮ কোটি টাকা আদায় করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন। এ ছাড়া বন্ধক রাখা জমিগুলো কেনা হয়েছে ২০২২ সালে। অর্থাৎ কারখানা তৈরি ও জমি কেনার আগেই কাগুজে প্রতিষ্ঠানকে ঋণ বিতরণ করেছে ইসলামী ব্যাংক।