ভারতের উত্তর প্রদেশে প্রায় ৩০০ মুসলিম ধর্মীয় স্থাপনা গুঁড়িয়ে দিয়েছে রাজ্য প্রশাসন। অভিযানে মাদ্রাসা, মসজিদ, মাজার ও ঈদগাহসহ নানা স্থাপনাকে ‘অবৈধ’ উল্লেখ করে ভাঙচুর চালানো হয়েছে। প্রশাসনের দাবি, এসব স্থাপনা সরকারি জমি দখল করে অনুমতি ছাড়া নির্মাণ করা হয়েছিল।
রাজ্যের প্রশাসনিক বিবৃতি অনুযায়ী, ভারত-নেপাল সীমান্তবর্তী সাতটি জেলায় (মহারাজগঞ্জ, সিদ্ধার্থনগর, বালরামপুর, শ্রাবস্তী, বহরাইচ, লখিমপুর খেরি ও পিলিভীত) অভিযান চালানো হচ্ছে। এখন পর্যন্ত ভাঙা হয়েছে:
# ২২৫টি ‘অবৈধ’ মাদ্রাসা
# ৩০টি মসজিদ
# ২৫টি মাজার
# ৬টি ঈদগাহ
বুধবার (১৪ মে) এক দিনেই মহারাজগঞ্জে দুটি মাদ্রাসা, শ্রাবস্তী ও বহরাইচে একটি করে ধর্মীয় স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।
প্রশাসনের অবস্থান
প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, এসব স্থাপনা ১০ কিলোমিটার সীমান্তবর্তী এলাকায় অবস্থিত এবং সরকারি জমি, বনভূমি কিংবা জনসম্পত্তি দখল করে নির্মিত। প্রশাসনের ভাষায়, ‘ধর্মীয় রূপ থাকলেও, এসব স্থাপনা নির্মাণে কোনো অনুমতি বা বৈধ নথিপত্র ছিল না।’
অভিযানে অংশ নেয় জেলা প্রশাসন, পুলিশ বিভাগ এবং ভূমি জরিপ বিভাগ। অভিযুক্তদের চিহ্নিত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়াও চলছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন।
প্রতিক্রিয়া ও উদ্বেগ
এ ঘটনায় ভারতের মুসলিম সমাজ এবং বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। যদিও এখনো কোনো সংগঠন সরাসরি প্রতিবাদ কর্মসূচি ঘোষণা করেনি, তবে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা তীব্র হয়ে উঠছে। অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন- আইন প্রয়োগের নামে একপাক্ষিক ধর্মীয় বৈষম্যের পথে হাঁটছে না তো রাজ্য সরকার?
রাজনৈতিক বিশ্লেষণ
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, উত্তর প্রদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও সীমান্ত নিরাপত্তা ইস্যুকে সামনে রেখে সরকার কড়া অবস্থান নিচ্ছে। তবে ধর্মীয় সংবেদনশীলতা মাথায় রেখে ‘নির্বিচার উচ্ছেদ অভিযান’ কতটা সঠিক, তা নিয়ে মতবিরোধ স্পষ্ট।
উত্তর প্রদেশে ৩০০ মুসলিম স্থাপনা উচ্ছেদে প্রশাসনের পদক্ষেপকে ‘আইন অনুযায়ী’ বলা হলেও, এটি নতুন করে ধর্মীয় বৈষম্য ও সংখ্যালঘু অধিকার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের অবস্থান ও ভবিষ্যৎ পদক্ষেপের দিকেও নজর রাখছে আন্তর্জাতিক মহল।