ঢাকা রবিবার, ১৮ মে, ২০২৫

হামলার আগেই পাকিস্তানকে জানায় ভারত, তোলপাড়

হিন্দুস্তান টাইমস
প্রকাশিত: মে ১৭, ২০২৫, ০৯:০১ পিএম
ছবি: সংগৃহীত

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের তীব্র সমালোচনা করেছেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী। অপারেশন সিন্দুরের অংশ হিসেবে ‘সন্ত্রাসী অবকাঠামো’ লক্ষ্য করে হামলা চালানোর বিষয়ে পাকিস্তানকে ‘অবহিত’ করাকে একটি অপরাধ বলে উল্লেখ করেন রাহুল। এই তথ্য জানানোর অনুমোদন কে দিয়েছে তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন।

শনিবার (১৭ মে) এস জয়শঙ্করের সমালোচনা করে রাহুল বলেন, ‘কেন্দ্র পাকিস্তানকে এই পদক্ষেপের কথা জানিয়েছিল, তিনি (জয়শঙ্কর) প্রকাশ্যে এটি স্বীকার করেছেন।’
 
রাহুল প্রশ্ন তোলেন, ইসলামাবাদের সঙ্গে এই ধরনের তথ্য ভাগাভাগি করার ফলে ভারতীয় বিমানবাহিনী কতগুলো বিমান হারিয়েছে।

রায়বেরেলির সাংসদ এক্স-এর একটি পোস্টে বলেছেন, ‘আমাদের আক্রমণের শুরুতে পাকিস্তানকে তা জানানো ছিল একটি অপরাধ। পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রকাশ্যে স্বীকার করেছেন যে, ভারত সরকার এটি করেছে। কে এটি অনুমোদন করেছে? এর ফলে আমাদের বিমানবাহিনী কতটি বিমান হারিয়েছে?’
 
রাহুল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি তারিখহীন ভিডিও শেয়ার করেছেন যেখানে বলা হচ্ছে যে, ভারত পাকিস্তানকে তার মাটিতে ‘সন্ত্রাসী অবকাঠামোর’ বিরুদ্ধে পদক্ষেপের কথা জানিয়েছে।

রাহুল গান্ধীর শেয়ার করা ভিডিওতে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে বলতে শোনা যাচ্ছে যে, ‘সরকার পাকিস্তানকে একটি বার্তা পাঠিয়েছে যে হামলাগুলো সেনাবাহিনীর উপর নয়, কেবল সন্ত্রাসী পরিকাঠামোর ওপর।’

ক্লিপে জয়শঙ্করকে আরও বলতে শোনা যায়, ‘অভিযানের শুরুতে, আমরা পাকিস্তানকে একটি বার্তা পাঠিয়েছিলাম, আমরা সন্ত্রাসী অবকাঠামোতে আঘাত করছি এবং আমরা সেনাবাহিনীর ওপর হামলা করছি না। তাই সেনাবাহিনীর কাছে সুযোগ আছে এই প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ না করার। তারা সেই ভালো পরামর্শ না নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’

তবে প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরো (পিআইবি) সেই দাবি অস্বীকার করেছে যে, জয়শঙ্কর বলেছিলেন ভারত অপারেশন সিন্দুরের আগে পাকিস্তানকে জানিয়েছিল।
 
পিআইবির ফ্যাক্ট চেক ইউনিট জানিয়েছে, মন্ত্রী এমন কোনো বক্তব্য দেননি এবং তার বক্তব্য ভুলভাবে উদ্ধৃত করা হচ্ছে।

২২ এপ্রিল জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগামে হামলার জেরে পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশ এবং পাক-অধিকৃত কাশ্মীরে (পিওকে) ‘অপারেশন সিন্দুর’ নামে সামরিক হামলা চালায় ভারত। পরে পাকিস্তানও পাল্টা হামলা চালায়।

গত ১০ মে সোশ্যাল মিডিয়া ট্রুথ সোশ্যালে দেয়া এক পোস্টে, ভারত ও পাকিস্তান ‘পূর্ণ ও তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতিতে’ সম্মত হয়েছে বলে জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। 
 
ভারত ও পাকিস্তানের চার দিনের পাল্টাপাল্টি হামলার পর এক বিবৃতিতে ট্রাম্প বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় দীর্ঘ রাতব্যাপী আলোচনার পর তারা যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে।’
 
ট্রুথ সোশ্যালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট লেখেন, ‘আমি আনন্দের সাথে ঘোষণা করছি যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় রাতব্যাপী দীর্ঘ আলোচনার পর ভারত ও পাকিস্তান একটি পূর্ণ ও তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে।’
 
পরে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়ার কথা নিশ্চিত করে ভারত ও পাতিস্তান।

বিবিসিকে এ বিষয়ে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি জানান, ভারত এবং পাকিস্তান স্থল, আকাশ ও সমুদ্র পথে সব ধরনের যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। ভারতীয় সময় বিকেল ৫টা (১০ মে) থেকে এ যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়।
 
এদিকে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধবিরতি ১৮ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাত দিয়ে এ খবর দিয়েছে ভারতের স্থানীয় গণমাধ্যম।