ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, তারা আগামী দুই মাসে গাজা উপত্যকার ৭৫ শতাংশ ভূখণ্ড দখল করার জন্য ব্যাপক সামরিক অভিযান শুরু করেছে।
রোববার (২৫ মে) এ ঘোষণা আসে মার্চের মাঝামাঝি যুদ্ধবিরতির অবসান ঘটিয়ে নতুন করে শুরু হওয়া বিমান হামলার পর। ইতোমধ্যেই গাজায় পাঁচটি ডিভিশনে হাজার হাজার সেনা মোতায়েন করা হয়েছে।
এই অভিযানের মাধ্যমে হামাসের সামরিক কাঠামো ও প্রশাসনিক ক্ষমতা সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। আইডিএফ স্পষ্ট জানিয়েছে, তারা এখন কেবল সন্ত্রাসীকে নির্মূল নয়, বরং সম্পূর্ণ এলাকা দখল এবং স্থায়ীভাবে হামাসকে ক্ষমতাচ্যুত করতে চায়।
তবে এর পরিণতিতে গাজার প্রায় ২৩ লাখ বাসিন্দার মধ্যে প্রায় ১৫ লাখ মানুষকে উপত্যকার মাত্র ২৫ শতাংশ এলাকায় ঠেলে দেওয়া হবে, যা সৃষ্টি করবে এক ভয়াবহ মানবিক সংকট।
আইডিএফের পরিকল্পনা অনুযায়ী, ফিলিস্তিনিদের নিরাপদ অঞ্চল হিসেবে দক্ষিণের মাওয়াসি, মধ্য গাজার দেইর আল-বালাহ ও নুসাইরাত, এবং গাজা শহরের একটি অংশ নির্ধারিত হয়েছে।
ইতোমধ্যে আইডিএফ গাজার ৭৭ শতাংশ অংশ নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। তারা দাবি করছে, হামাসের ৯০০ কিলোমিটার দীর্ঘ টানেল ব্যবস্থার ২৫ শতাংশ ধ্বংস করা হয়েছে এবং সংগঠনটির কমান্ড-নিয়ন্ত্রণ কাঠামো মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত।
আইডিএফ চিফ অব স্টাফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল ইয়াল জামির বলেন, ‘এটা কোনো অন্তহীন যুদ্ধ নয়। আমরা পরিকল্পিত ও সুশৃঙ্খলভাবে এগোচ্ছি। হামাস বিপদের মধ্যে রয়েছে এবং তাদের রসদ ও নেতৃত্ব দুর্বল হয়ে পড়েছে।’
অন্যদিকে, আইডিএফ অভিযোগ করছে, যুদ্ধবিরতির সময় প্রবেশ করা মানবিক সাহায্য হামাস নিজেদের ক্ষমতা সংহত করার কাজে ব্যবহার করেছে। তাই এখন এক নতুন বিতরণ ব্যবস্থার অধীনে চারটি কেন্দ্র থেকে খাদ্য বিতরণ করা হবে, যা পরিচালনা করবে একটি বেসরকারি মার্কিন নিরাপত্তা সংস্থা। ধারণা করা হচ্ছে, এসব কেন্দ্র প্রতি সপ্তাহে তিন লাখ মানুষকে খাদ্য সহায়তা দেবে।
যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে আইডিএফ ২ হাজার ৯০০ এর বেশি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে এবং কমপক্ষে ৮০০ হামাস যোদ্ধাকে হত্যা করেছে বলে দাবি করেছে।
এদিকে, গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত ৫৩ হাজারের বেশি মানুষ নিহত বা নিখোঁজ। তবে এই সংখ্যা নিরপেক্ষভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি।
অভিযান চলমান থাকা সত্ত্বেও, ‘হামাসের পতনের পর গাজা কে শাসন করবে’ —সেই প্রশ্নে ইসরায়েল এখনও স্পষ্ট কোনো পরিকল্পনা উপস্থাপন করেনি।
আপনার মতামত লিখুন :