সৌদি আরবে চলমান হজ উপলক্ষে তীব্র দাবদাহের কারণে মঙ্গলবার (৩ জুন) সৌদি কর্তৃপক্ষ হাজিদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, তারা যেন হজের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত আরাফাত দিবসে কয়েক ঘণ্টা তাদের তাঁবুতে অবস্থান করেন।
সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহ-বিষয়ক মন্ত্রী তৌফিক আল-রাবিয়াহ জানিয়েছেন, আরাফার দিবসে বৃহস্পতিবার (৫ জুন) সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত হাজিদের তাবু ছেড়ে না যাওয়ার অনুরোধ করা হচ্ছে। এ তথ্য সৌদি প্রেস এজেন্সি (এসপিএ) প্রকাশ করেছে।
এসপিএ জানিয়েছে, আল-রাবিয়াহ ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘আরাফাত দিবসে তীব্র তাপমাত্রার কারণে হাজিদের সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত তাঁবুতে অবস্থান করা প্রয়োজন, যাতে তাদের স্বাস্থ্য রক্ষা করা যায় এবং গরমজনিত সমস্যায় ভোগা থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।’
আরাফা দিবস হজের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে বিবেচিত হয়। এদিন হাজিরা মক্কার বাইরে অবস্থিত আরাফার ময়দানে সমবেত হন।
এ সময় তারা ৭০ মিটার (২৩০ ফুট) উঁচু পাহাড় ও তার আশপাশের সমতল প্রান্তরে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে দোয়া, ইবাদত ও কোরআন তেলাওয়াতে ব্যস্ত থাকেন। সন্ধ্যা পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করেন।
তবে আরাফার পাহাড়ে ছায়া প্রায় নেই বললেই চলে, ফলে হাজিদের দীর্ঘ সময় ধরে রোদের মধ্যে থাকতে হয়, যা স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।
সৌদি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় একটি পৃথক বিবৃতিতে সতর্ক করে বলেছে, ‘আমরা সবাইকে সতর্ক করছি, যেন কেউ আরাফা দিবসে পাহাড় বা উঁচু স্থানে না ওঠেন, কারণ এটি অতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রম সৃষ্টি করে এবং হিটস্ট্রোক বা গরমজনিত অসুস্থতার ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।’
চলতি বছর হজ শুরু হবে আগামীকাল বুধবার। আবহাওয়াবিদদের পূর্বাভাস অনুযায়ী, তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যেতে পারে। বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ এই বার্ষিক ধর্মীয় সমাবেশে পৃথিবীর নানা প্রান্ত থেকে লাখ লাখ মানুষ অংশ নিচ্ছেন।
২০২৪ সালের হজেও যখন তাপমাত্রা ৫১.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস পৌঁছেছিল, তখন এক হাজার ৩০১ জন হাজির মৃত্যু হয়েছিল। এ ধরনের ঘটনা পুনরাবৃত্তি এড়াতে সৌদি সরকার এবার ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে।
চলতি বছর ৪০টিরও বেশি সরকারি সংস্থা ও ২ লাখ ৫০ হাজার সরকারি কর্মচারী হজ ব্যবস্থাপনায় যুক্ত হয়েছে। তারা গরমের প্রভাব মোকাবিলায় দ্বিগুণ প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে।
হজমন্ত্রী আল-রাবিয়াহ জানিয়েছেন, ৫০ হাজার বর্গমিটার নতুন ছায়াযুক্ত এলাকা যুক্ত করা হয়েছে, হাজার হাজার চিকিৎসক প্রস্তুত রাখা হয়েছে এবং ৪০০টির বেশি শীতলীকরণ ইউনিট মোতায়েন করা হয়েছে।
সৌদি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রোববার পর্যন্ত প্রায় ১৫ লাখ হাজি হজ পালনের জন্য সৌদি আরবে পৌঁছেছেন।
সূত্র : আল আরাবিয়া
আপনার মতামত লিখুন :