ভারতের আহমেদাবাদে স্মরণকালের ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনায় প্রায় ৩০০ জন নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (১২ জুন) রাতে স্থানীয় গণমাধ্যম দেশ গুজরাটের এক প্রতিবেদনে নিহতের এ সংখ্যা জানানো হয়েছে।
এয়ার ইন্ডিয়ার বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার মডেলের ওই বিমানে থাকা ২৪২ আরোহীর মধ্যে ২৪১ জনই নিহত হয়েছেন। বিমানটি আছড়ে পড়ে আহমেদাবাদের বিজে মেডিকেল কলেজের ছাত্রাবাসে, যেখানে আরও অন্তত ৫০ জন প্রাণ হারিয়েছেন।
গুজরাটের পুলিশ কর্মকর্তা বিধি চৌধুরী রয়টার্সকে বলেছেন, “দুর্ঘটনায় প্রায় ২৯৪ জন নিহত হয়েছেন। এতে কিছু শিক্ষার্থী রয়েছে। যারা মেডিকেল কলেজের ছাত্রাবাসে ছিলেন।”
আহমেদাবাদ পুলিশের প্রধান জি এস মালিক জানিয়েছেন, দুর্ঘটনাস্থল থেকে ২০০টিরও বেশি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। যারমধ্যে বিমানের যাত্রী ছাড়াও ওই মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীদের মরদেহ আছে। এছাড়া নিহতদের মধ্যে আছেন গুজরাটের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রুপানি।
ভারতের স্বাস্থ্য সচিব ধনঞ্জয় দ্বিবেদী বিমানে থাকা যাত্রী ও ওই ছাত্রাবাসে থাকা শিক্ষার্থীদের পরিবারের সদস্যদের ডিএনএ সেম্পল দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন। যেন মরদেহগুলো শনাক্ত করা যায়।
বিমানটি মেডিকেল কলেজের ছাত্রাবাসে আছড়ে পড়ার পর টুকরো টুকরো হয়ে যায়। এটির লেজের অংশটি ছাত্রাবাসের একটি ভবনের ছাদে এখনো পড়ে আছে। বিমানটি ছিল বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার। যা বিশ্বের অন্যতম আধুনিক বিমান। এর আগে বোয়িংয়ের এ মডেলের বিমান কখনো বিধ্বস্ত হয়নি।
এই দুর্ঘটনায় আশ্চর্যজনকভাবে এক ব্রিটিশ নাগরিকের বেঁচে ফেরা ঘটনা ঘটেছে। বিবিসি জানিয়েছে, জীবিত উদ্ধার হওয়া ব্যক্তি ব্রিটিশ নাগরিক বিষ্ণু কুমার রমেশ। ৪০ বছর বয়সী এই ব্যক্তি সামান্য আঘাত পেয়েছেন এবং নিজে হেঁটেই দুর্ঘটনাস্থল থেকে বেরিয়ে আসেন।
হিন্দুস্তান টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘উড্ডয়নের ত্রিশ সেকেন্ড পরই একটা বিকট শব্দ হয়। তারপরই বিমানটি ভেঙে পড়ে। সবকিছু এত দ্রুত ঘটে গেছে।’
বিমানটিতে মোট ২৪২ জন যাত্রী ছিলেন, এর মধ্যে ১২ জন ছিলেন ক্রু সদস্য। এয়ার ইন্ডিয়ার বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, যাত্রীদের মধ্যে ছিলেন ১৬৯ জন ভারতীয়, ৫৩ জন ব্রিটিশ, ৭ জন পর্তুগিজ এবং ১ জন কানাডীয় নাগরিক।
মোট মৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। কারণ উদ্ধারকর্মীরা পোড়া বিমানের ধ্বংসাবশেষের ভেতর থেকে মৃতদেহ উদ্ধারের কাজ এখনো চালিয়ে যাচ্ছেন।
আপনার মতামত লিখুন :