ইরানে হামলায় ইসরায়েলের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজেকে জড়িয়ে ফেললে তা হবে ইতিহাসের জঘন্যতম ঘটনা। এতে গোটা অঞ্চলই নরকে পরিণত হবে বলে হুঁশিয়ার করেছেন ইরানের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী সাঈদ খতিবজাদে।
বৃহস্পতিবার ( ১৯ জুন) বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন তিনি।
সাঈদ খতিবজাদে বলেছেন, ‘এটা আমেরিকার যুদ্ধ নয়। যদি ডোনাল্ড ট্রাম্প এই যুদ্ধে জড়ান তাহলে ইতিহাস তাকে মনে রাখবে এমন একজন প্রেসিডেন্ট হিসাবে যিনি একটি যুদ্ধে নাম লিখিয়েছেন, যা তার যুদ্ধ ছিল না।’
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সম্পৃক্ততা এই সংঘাতকে একটি জটিল ফাঁদে পরিণত করবে। এতে আগ্রাসন চলতে থাকবে। নৃশংস নির্যাতনের অবসান আরও বিলম্বিত হবে।
খতিবজাদেহ বলেন, ইরান কূটনীতি চায়। কিন্তু তার দেশের বিরুদ্ধে বোমাবর্ষণ অব্যাহত থাকলে কেউ আলোচনায় যেতে পারবে না। যে মুহূর্তে এই আগ্রাসন বন্ধ হবে, অবশ্যই কূটনীতিই হবে প্রথম বিকল্প। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইরান পারমাণবিক চুক্তির দ্বারপ্রান্তে ছিল। কিন্তু সেই চুক্তি চূড়ান্ত হওয়ার আগেই নাশকতা চালিয়ে সুযাগ নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, আগামী ‘দুই সপ্তাহের মধ্যে’ তিনি সিদ্ধান্ত নেবেন—যুক্তরাষ্ট্র এই সংঘাতে জড়াবে কি না।
তিনি বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট মনে করছেন, এখনো কূটনৈতিক প্রচেষ্টার সুযোগ রয়েছে। ইরানের সঙ্গে আলোচনা হতে পারে বা নাও হতে পারে—এই সম্ভাবনাগুলো মাথায় রেখে তিনি সিদ্ধান্ত নেবেন।’
এদিকে, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার মার্কিন সামরিক হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘এই সংঘাতে জড়িয়ে পড়লে তা আরও বড় পরিসরে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এখন দরকার কূটনৈতিক সমাধান।’
গোয়েন্দা সূত্রের বরাত দিয়ে জানা গেছে, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি সম্পূর্ণভাবে বন্ধ না করা পর্যন্ত হামলার সিদ্ধান্ত স্থগিত রাখার পক্ষে যুক্তরাষ্ট্র। যদিও মঙ্গলবার রাতে ট্রাম্প ইরানে হামলার একটি পরিকল্পনায় সম্মতি দিয়েছিলেন, বুধবার পর্যন্ত তিনি সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের চূড়ান্ত নির্দেশ দেননি।
তবে ট্রাম্প বলেছেন, ‘আমি এটা (হামলা) করতে পারি, আবার নাও করতে পারি।’ এই মন্তব্য থেকেই স্পষ্ট, হোয়াইট হাউস এখনো দ্বিধার মধ্যে রয়েছে—সরাসরি সামরিক পদক্ষেপ নেবে, নাকি কূটনৈতিক পথে সমাধানের দিকে যাবে।
আপনার মতামত লিখুন :