ইরান-ইসরায়েলের ১২ দিনের যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর থেকেই ইরানে বসবাসরত ‘অবৈধ’ আফগান শরণার্থীদের বিরুদ্ধে দমন-পীড়ন ও জোরপূর্বক ফেরত পাঠানোর হার বেড়ে গেছে। জাতিসংঘের তথ্যমতে, সম্প্রতি আফগানিস্তানে ফিরে যাওয়া শরণার্থীদের ৭০ শতাংশকেই জোরপূর্বক দেশত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে। এর মধ্যে অনেক নারী ও শিশু রয়েছে।
ইরানে বসবাসরত আফগানরা অভিযোগ করেছেন, বিভিন্ন গণমাধ্যমে নেতিবাচক প্রচারণার কারণে তারা রাস্তাঘাটে ও বাজারে নানাভাবে অপমান ও হয়রানির শিকার হচ্ছেন। অনেককে ইসরায়েলের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে সন্দেহভাজন হিসেবে চিহ্নিতও করা হচ্ছে।
জাতিসংঘের অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) জানায়, জুন মাসেই ইরান থেকে ২ লাখ ৫৬ হাজারেরও বেশি আফগান নাগরিক দেশত্যাগ করেছেন। সংস্থাটির হিসাব অনুযায়ী, চলতি বছর ইরান ও পাকিস্তান মিলিয়ে মোট এক কোটি আফগান শরণার্থীকে জোরপূর্বক নিজ দেশে ফেরত পাঠানো বা নির্বাসিত করা হয়েছে।
ফেরত পাঠানোর সময় সীমান্তে হেনস্তা ও নির্যাতনের অভিযোগও উঠেছে। অনেক আফগান নাগরিক জানিয়েছেন, বৈধ কাগজপত্র থাকা সত্ত্বেও তাদের আটক করে দেশে পাঠানো হয়েছে। এমনকি, তল্লাশি চৌকিতে মোবাইল ফোন জব্দ করার ঘটনাও ঘটেছে।
ইউনিসেফ জানায়, জোরপূর্বক ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়ায় ৫ হাজারেরও বেশি আফগান শিশু তাদের পরিবারের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
তেহরানে বসবাসরত এক আফগান নাগরিক জানান, ‘বর্তমানে অবস্থা খুবই ভয়াবহ। এমনকি ছোট কারখানাগুলোতেও পুলিশ হানা দিয়ে আফগানদের ধরে নিয়ে যাচ্ছে।’
ইরানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সিকান্দার মোমেনি বলেছেন, ‘আফগানরা পরিশ্রমী, তবে আমাদের দেশের ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়ছে। অনেকেই গত দুই-তিন বছরে বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে ইরানে প্রবেশ করেছে।’
ইরান সরকারের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশটিতে আনুমানিক ৬০ লাখ আফগান বসবাস করছেন। তবে তাদের মধ্যে কতজনের বৈধ কাগজপত্র নেই সে বিষয়ে নির্ভরযোগ্য তথ্য নেই। জাতিসংঘের মতে, ইরানে বর্তমানে প্রায় ২০ লাখ আফগান নাগরিক অবৈধভাবে অবস্থান করছেন।
আপনার মতামত লিখুন :