টানা কয়েক দিনের ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে দক্ষিণ কোরিয়ায় বন্যা ও ভূমিধস দেখা দিয়েছে। এতে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছেন ১২ জন। তবে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে দেশটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে রোববার (২০ জুলাই) এ তথ্য জানিয়েছে বিবিসি।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দক্ষিণ কোরিয়ার ভূমিধসে ক্ষতিগ্রস্ত রিসোর্ট শহর গ্যাপিয়ং-এ ঘন কাদার মধ্যে স্থানীয় লোকজনকে হেঁটে যেতে দেখা গেছে। তারা ভেঙে পড়া একটি সেতু পার হয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে যাচ্ছিলেন।
শনিবারের ভারইরাল হওয়া একটি ফুটেজে দেখা গেছে, দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় মধ্য চুংচেওংয়ে ভূমিধসের পর একটি পুরো গ্রাম মাটিতে দেবে গেছে। চারদিকে শুধুই ধ্বংসাবশেষ। বেশিরভাগ ধ্বংসযজ্ঞ দেশটির দক্ষিণাঞ্চলে ঘটেছে। ভূমিধসে সানচেংয়ে ছয়জন নিহত এবং সাতজন নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানিয়েছে বিবিসি।
বন্যার পানিতে হাজার হাজার রাস্তাঘাট ও ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ডুবে গেছে কৃষিজমি, গবাদি পশুর ব্যাপক মৃত্যুর খবরও পাওয়া গেছে।
স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, বুধবার থেকে শুরু হওয়া মুষলধারে বৃষ্টিপাতের পর থেকে এই অঞ্চলজুড়ে প্রায় ১০ হাজার মানুষ তাদের বাড়িঘর ছেড়ে চলে গেছেন। ৪১ হাজারের বেশি পরিবার সাময়িকভাবে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে, সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত দক্ষিণ ও মধ্য অঞ্চলে বৃষ্টিপাত কমেছে, তবে রাতারাতি বৃষ্টিপাত উত্তর দিকে সরে গেছে এবং রোববার রাজধানী সিউল ও উত্তরাঞ্চলে আরও ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
আজ রোববার প্রেসিডেন্ট লি জে-মিয়ং সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোকে বিশেষ দুর্যোগ অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করার নির্দেশ দিয়েছেন। একইসঙ্গে সরকারি-বেসরকারি বহু সংস্থা উদ্ধার, পুনর্নির্মাণ কাজ শুরু করেছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইউন হো-জং স্থানীয় প্রশাসনকে ‘সকল উপলব্ধ সম্পদ’ দ্রুত কাজে লাগাতে বলেছেন।
সরকারি কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে এএফপি জানিয়েছে, উত্তরাঞ্চলীয় গ্যাপিয়ং কাউন্টিতে ভূমিধসে দুইজন নিহত হয়েছে এবং বেশ কয়েকটি সম্পত্তি কাদায় ডুবে গেছে। আজ শেষের দিকে বৃষ্টিপাত বন্ধ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, তবে তার পরে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাবে।
আপনার মতামত লিখুন :