নেপালে জেন-জি বিক্ষোভ চলাকালে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগকে দেশের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক কাজ বলে অভিহিত করেছেন দেশটির অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধানমন্ত্রী সুশীলা কার্কি। পাশাপাশি দোষীদের বিচারের আশ্বাস, ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য আর্থিক সহায়তা এবং নির্ধারিত সময়ে নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি। এমনকি মাত্র ২৭ ঘণ্টার বিক্ষোভে যে পরিবর্তন এসেছে, তা আগে কখনো দেখেননি বলেও মন্তব্য সুশীলা কার্কির।
রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম কাঠমান্ডু পোস্ট।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, গত সপ্তাহের জেন-জি বিক্ষোভে সংঘটিত অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরকে দেশের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বলে আখ্যায়িত করেছেন নেপালের অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী সুশীলা কার্কি। শুক্রবার দায়িত্ব পাওয়ার পর রোববারই আনুষ্ঠানিকভাবে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন কার্কি। সিংহ দরবারে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রথম বক্তব্যে কার্কি বলেন, এসব অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের তদন্ত করে সত্য প্রকাশ করতে হবে এবং দোষীদের বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। তিনি সঠিক পথে দেশকে এগিয়ে নিতে সবার সম্মিলিত অঙ্গীকারের ওপর জোর দেন।
কার্কি বলেন, ‘মাত্র ২৭ ঘণ্টার বিক্ষোভে যে পরিবর্তন এসেছে, তা আমি আগে কখনো দেখিনি। এ প্রজন্মের দাবি পূরণে আমাদের দৃঢ় সংকল্পে কাজ করতে হবে। আমি ইচ্ছা করে এখানে আসিনি; আপনাদের অনুরোধেই এই দায়িত্ব নিয়েছি। বিক্ষোভের নামে যা ঘটেছে, তা পরিকল্পিত মনে হয়, যা ষড়যন্ত্রের আশঙ্কা তৈরি করে।’ তিনি জানান, সিংহ দরবার, পার্লামেন্ট ভবন, সুপ্রিম কোর্ট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিগত সম্পত্তিতে সংঘটিত ভাঙচুরের তদন্ত করবে সরকার। একই সঙ্গে তিনি সবাইকে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান, যাতে দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে পারে।
দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই নেপালে জেন-জিদের বিক্ষোভে নিহতদের শহীদ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে দেশটির সরকার। পাশাপাশি তাদের পরিবারকে ১০ লাখ নেপালি রুপি আর্থিক সহায়তার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি বিক্ষোভে হতাহতদের সহায়তার সিদ্ধান্তে স্বাক্ষর করেন সুশীলা। সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ১৩৪ জন বিক্ষোভকারী ও পুলিশের ৫৭ জন সদস্যকে বিনামূল্যে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে। এ ছাড়া, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়কে ক্ষয়ক্ষতির বিস্তারিত প্রতিবেদন তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সরকারি হিসাব অনুযায়ী, বিক্ষোভ ও সহিংসতায় নিহতের সংখ্যা ৭২ জনে পৌঁছেছে। তাদের মধ্যে ৫৯ জন বিক্ষোভকারী, ১০ জন বন্দি ও তিনজন পুলিশ সদস্য।
এছাড়া উদ্বোধনী ভাষণে নেপালে নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা জানান তিনি। সে সময় নির্বাচন আয়োজনই তার সরকারের রোডম্যাপের প্রধান কাজ বলে আখ্যায়িত করেন সুশীলা কার্কি।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন