ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীকে গাজায় হামলা বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে দেশটির সরকার। ইসরায়েলের রাষ্ট্রীয় অর্থায়নে এবং সেনাবাহিনী পরিচালিত ‘আর্মি রেডিও’ এ খবর প্রচার করেছে। ফিলিস্তিনের গাজায় চলমান যুদ্ধ বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রের শান্তি পরিকল্পনার প্রস্তাবে হামাসের আংশিক রাজি হওয়ার সিদ্ধান্ত জানানোর পর ইসরায়েল সরকার এ নির্দেশ দিল।
এ বিষয়ে আর্মি রেডিওর সংবাদকর্মী ডরোন কাদোস বলেন, ইসরায়েলের ‘রাজনৈতিক মহল’ গাজায় চলা সামরিক কার্যক্রম ‘সর্বনিম্ন’ পর্যায়ে নামিয়ে আনতে এবং শুধু ‘প্রতিরক্ষামূলক পদক্ষেপ’ নিতে সেনাবাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে কাদোস বলেন, ‘এর বাস্তবিক অর্থ হলো: (গাজা সিটি) দখলের অভিযান বন্ধ রয়েছে এবং আপাতত এটা স্থগিত করা হয়েছে।’
এ বিষয়ে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরও বিবৃতি দিয়েছে। বার্তাসংস্থা রয়টার্স বলছে, হামাস ট্রাম্পের প্রস্তাব মেনে সব জিম্মিকে ছেড়ে দিতে রাজি হওয়ার পর ইসরায়েলও পরিকল্পনাটির প্রথম পর্যায়ের ‘তাৎক্ষণিক বাস্তবায়নের’ প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে ওই বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শুক্রবার (০৩ অক্টোবর) হামাসকে তাঁর প্রস্তাব মেনে নেওয়ার সময়সীমা বেঁধে দেন। তিনি বলেন, রোববার যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে প্রস্তাব মেনে নিতে হবে। নয়তো হামাসকে ‘নরক যন্ত্রণা ভোগ’ করতে হবে বলে হুমকি দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
এর কয়েক ঘণ্টা পর ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠনটি এক বিবৃতিতে আংশিকভাবে প্রস্তাব মেনে নেওয়ার ঘোষণা দেয়। বিবৃতিতে বলা হয়, জীবিত ও মৃত সব জিম্মিকে মুক্তি দিতে রাজি আছে হামাস। প্রস্তাবের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত নিয়ে আরও আলোচনার দাবি জানিয়েছে তারা।
হামাসের এমন সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন ট্রাম্প। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠনটি স্থায়ী শান্তির জন্য প্রস্তুত বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
এর আগে গত সোমবার গাজায় যুদ্ধ বন্ধে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ২০ দফা পরিকল্পনা প্রকাশ করে হোয়াইট হাউস। এরপর ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুও এতে সম্মতি জানান।
পরিকল্পনায় বলা হয়, গাজায় ‘তাৎক্ষণিকভাবে’ যুদ্ধ বন্ধ করতে হবে। এর পাশাপাশি ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ২০ জন জীবিত জিম্মিকে ফিরিয়ে দিতে হবে। মৃত জিম্মিদের দেহাবশেষ হস্তান্তর করতে হবে। বিনিময়ে ইসরায়েলে আটক থাকা গাজার ‘শত শত বাসিন্দাকে’ মুক্তি দেবে নেতানিয়াহু সরকার।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন