অবৈধ অভিবাসনের ক্রমবর্ধমান প্রবণতার কারণে ব্রিটেন নিজের সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছে বলে সতর্ক করেছেন দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাবানা মাহমুদ। বুধবার (১৫ অক্টোবর) লন্ডনে বলকান অঞ্চলের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে এক শীর্ষ সম্মেলনে তিনি এই সতর্কবার্তা দেওয়ার কথা রয়েছে। বৈঠকটিতে মূলত ইউরোপ ও যুক্তরাজ্যে অবৈধ অভিবাসন রোধে সমন্বিত পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা হবে।
তার নির্ধারিত বক্তৃতার কিছু অংশ ইতোমধ্যেই দেশটির বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে মাহমুদ লিখেছেন, ‘ব্রিটিশ জনগণ যথার্থভাবেই আশা করে যে, তাদের সরকার নির্ধারণ করতে পারবে, কে দেশে প্রবেশ করবে এবং কে নয়। কিন্তু আজ বাস্তবতা তা নয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের সীমান্তে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে ব্যর্থতা শুধু রাজনৈতিক নেতৃত্বের ওপরই নয়, বরং রাষ্ট্রের বিশ্বাসযোগ্যতার ওপরও আঘাত হানছে।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ জোর দিয়ে বলেন, এই সংকটের সমাধান একা কোনো দেশ করতে পারবে না। আমাদের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বাড়াতে হবে। ভিতরে মুখ ফিরিয়ে নেওয়া নয়, বরং সমন্বিত উদ্যোগই এখন প্রয়োজন। তিনি জানান, অভিবাসন ব্যবস্থাপনা জোরদারের অংশ হিসেবে সরকার অভিবাসীদের জন্য নতুন ‘প্রত্যাবর্তন কেন্দ্র’ স্থাপনের পরিকল্পনা করছে।
এর আগের দিন মঙ্গলবার মাহমুদ ঘোষণা করেন, অভিবাসীদের ইংরেজি ভাষার যোগ্যতা মানদণ্ড আরও কঠোর করা হবে। আগের জেনারেল সার্টিফিকেট অব সেকেন্ডারি এডুকেশন (জিসিএসই) স্তর থেকে তা উন্নীত করে এখন এ-লেভেল দক্ষতা অর্জনের বাধ্যবাধকতা আনা হচ্ছে।
সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৫ সালের জুনে শেষ হওয়া বছরে যুক্তরাজ্যে মোট ৪৯ হাজার অনিয়মিত অভিবাসন ঘটেছে, যা আগের বছরের তুলনায় ২৭ শতাংশ বেশি। এর মধ্যে ছোট নৌকায় পারাপার ছিল প্রায় ৮৮ শতাংশ, যা বছরওয়ারি ৩৮ শতাংশ বৃদ্ধি নির্দেশ করে।
দীর্ঘদিন ধরে চলা এই অভিবাসন সংকট সামাল দিতে ব্যর্থ হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের লেবার সরকার বিরোধীদের কঠোর সমালোচনার মুখে পড়েছে। গত মাসে দেশজুড়ে ‘অপারেশন রেইজ দ্য কালারস’ নামের এক অভিবাসনবিরোধী আন্দোলনে হাজারো মানুষ সেন্ট জর্জ ও ইউনিয়ন জ্যাক পতাকা হাতে বিক্ষোভে অংশ নেয়।
সূত্র: ইউনাইটেড প্রেস ইন্টারন্যাশনাল
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন