থাইল্যান্ড–মালয়েশিয়া সীমান্তের কাছে নৌকাডুবির ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে ১৩ হয়েছে। ওই নৌকায় প্রায় ৭০ আরোহী ছিলেন, যাঁদের প্রায় সবাই মিয়ানমারের নিপীড়িত রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের।
বার্তাসংস্থা আনাদোলু এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করে।
মালয়েশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদসংস্থা বারনামা জানিয়েছে, তারা এ ঘটনায় ৭ রোহিঙ্গার মৃতদেহ উদ্ধার করেছে। অপরদিকে থাই কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সাগর থেকে ৬ রোহিঙ্গার মৃতদেহ উদ্ধার করেছে ব্যাংকক।

সেখানে প্রায় ২৩০ যাত্রী বহনকারী আরেকটি নৌকার ঠিক কী হয়েছে, তা নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছে মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষ। মালয়েশিয়ার কোস্টগার্ডের ধারণা, নৌকাটি দেশটির পর্যটন দ্বীপ লঙ্কাবির কাছে ডুবে গেছে। ওই নৌকার ১৩ যাত্রীকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে, যাঁদের বেশির ভাগই রোহিঙ্গা।
এ বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য জানাতে লঙ্কাবি দ্বীপে এক সংবাদ সম্মেলনে মালয়েশিয়ার মেরিটাইম এনফোর্সমেন্ট এজেন্সির পক্ষ থেকে বলা হয়, জীবিত ব্যক্তিদের উদ্ধারে থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়া উভয় দেশই আকাশ থেকে তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে।
এ বছরের জানুয়ারি থেকে নভেম্বরের শুরুর দিক পর্যন্ত ৫ হাজার ১০০–এর বেশি রোহিঙ্গা মিয়ানমার ও বাংলাদেশ থেকে সমুদ্রপথে অন্যান্য দেশে পৌঁছানোর চেষ্টা করেছেন। জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, তাঁদের মধ্যে প্রায় ৬০০ জন মারা গেছেন অথবা নিখোঁজ হয়েছেন।
মালয়েশিয়ার কেদাহ ও পার্লিস রাজ্য মেরিটাইম এনফোর্সমেন্ট এজেন্সির পরিচালক রোমলি মুস্তফা বলেন, ‘থাইল্যান্ডের সংস্থার (কোস্টগার্ড) সঙ্গে আমাদের খুবই ভালো সম্পর্ক রয়েছে। আমাদের মধ্যে যোগাযোগ খুব ভালো এবং তথ্যের আদান–প্রদানও হচ্ছে।’
ঘটনার পর অন্তত সাত দিন ধরে তল্লাশি ও উদ্ধার অভিযান চলবে বলেও জানান মুস্তফা।
পরিচালক রোমলি মুস্তফা আরও বলেন, তাঁরা এখন পর্যন্ত যেসব তথ্য পেয়েছেন, তার ভিত্তিতে বলা যায়, একটি নৌকা মিয়ানমার থেকে যাত্রা করেছে। প্রায় দুই সপ্তাহ আগে নৌকাটি বাংলাদেশ সীমান্তঘেঁষা মিয়ানমার উপকূল থেকে রওনা হয়। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার সেটির কয়েকজন যাত্রীকে অন্য একটি নৌকায় সরিয়ে নেওয়া হয়। যে ১৩ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে ১১ জন রোহিঙ্গা এবং দুজন বাংলাদেশি বলেও জানান রোমলি মুস্তফা।

মালয়েশিয়ার সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা এএফপি বলেছে, রোহিঙ্গারা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে সমুদ্রপথে মালয়েশিয়া বা দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ার অন্যান্য দেশে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এ জন্য তাঁদের একেকজনকে ৩ লাখ ৫২ হাজার থেকে ৩ লাখ ৮৫ হাজার টাকা (৩ হাজার ২০০ থেকে ৩ হাজার ৫০০ ডলার) গুনতে হয়।

সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন