গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রী কঙ্গোতে (ডিআরসি) আইএসআইএল (আইএসআইএস)-সমর্থিত বিদ্রোহীদের হামলায় চলতি আগস্ট মাসে অন্তত ৫২ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। সোমবার জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী মিশনের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা এ খবর জানিয়েছে।
জাতিসংঘ জানায়, আগস্টের ৯ থেকে ১৬ তারিখের মধ্যে উত্তর কিভুর বেনি ও লুবেরো এলাকায় সশস্ত্র গোষ্ঠী অ্যালাইড ডেমোক্র্যাটিক ফোর্সেস (এডিএফ) হামলা চালায়। এতে চলতি মাসে নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী মিশনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এডিএফের হামলার সঙ্গে অপহরণ, লুটপাট, ঘরবাড়ি, যানবাহন ও সম্পত্তিও ধ্বংস করেছে, যা আগেই মানবিক সংকটে থাকা মানুষের অবস্থা আরও নাজুক করে তুলেছে।
অঞ্চলটির সেনা মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট এলঙ্গো কিওন্ডওয়া মার্ক বলেন, এডিএফ কঙ্গোর সেনাদের কাছে পরাজিত হওয়ার প্রতিশোধ হিসেবে সাধারণ নাগরিকদের ওপর হামলা চালাচ্ছে। লুবেরোর বাসিন্দা নেতা ম্যাকারি সিভিকুনুলা জানান, ‘বিদ্রোহীরা প্রথমে মানুষজনকে ঘুম থেকে তুলে এক জায়গায় জড়ো করে, তাদের রশি দিয়ে বেঁধে কুঠার ও দা দিয়ে হত্যা করে।’
স্থানীয় কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে জানানো হয়, এ মাসে উত্তর কিভুর ওইচা শহরে এক হামলায় কমপক্ষে ৯ জন নিহত হন। কয়েকদিন আগেই একই প্রদেশের বাপেরে এলাকায় বিদ্রোহীরা অন্তত ৪০ জনকে হত্যা করে।
এর আগে গত মাসে ইটুরি প্রদেশের কোমান্ডা শহরে এক ক্যাথলিক গির্জায় প্রার্থনা চলাকালে হামলা চালিয়ে প্রায় ৪০ জনকে হত্যা করে এডিএফ। নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশুও ছিল।
এডিএফ ১৯৯০-এর দশকে উগান্ডার বিদ্রোহীদের একটি অংশ থেকে গঠিত হয়, যারা প্রেসিডেন্ট ইয়োওয়েরি মুসেভেনির শাসনে অসন্তুষ্ট ছিল। ২০০২ সালে উগান্ডায় সেনা অভিযান শুরুর পর তারা কঙ্গোয় চলে আসে। ২০১৯ সালে এডিএফ আইএসআইএল-এর প্রতি আনুগত্য ঘোষণা করে।
জাতিসংঘ জানিয়েছে, নতুন সহিংসতার প্রেক্ষাপটে শান্তিরক্ষী মিশন কয়েকটি এলাকায় সামরিক উপস্থিতি জোরদার করেছে এবং কয়েকশ বেসামরিককে তাদের ঘাঁটিতে আশ্রয় দিয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের শেষ দিকে উগান্ডা ও কঙ্গো যৌথভাবে ‘শুজা’ নামের সামরিক অভিযান চালু করলেও এখন পর্যন্ত এডিএফের হামলা বন্ধ করতে সক্ষম হয়নি।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন