পূর্ব আফ্রিকার দেশ মাদাগাস্কারে পানির সংকট ও বিদ্যুৎ বিভ্রাটের প্রতিবাদে হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেছে। তরুণ প্রজন্মের আন্দোলনকারীদের নেতৃত্বে তৃতীয় দফার এই বিক্ষোভে দেশটির সরকারের পদত্যাগের দাবি ওঠেছে।
সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) রাজধানী আন্তানানারিভোতে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করার জন্য পুলিশ টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করেছে। এ সময় অনেকেই সরকারের পদত্যাগ দাবি করেন। জাতিসংঘ জানিয়েছে, পানি ও বিদ্যুৎ বিভ্রাটে কমপক্ষে ২২ জন নিহত এবং ১০০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আফ্রিকার কেনিয়া ও এশিয়ার নেপালের ‘জেন-জি’ আন্দোলন থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে মাদাগাস্কারের তরুণরা সরকারবিরোধী বিক্ষোভ শুরু করেছেন। এটি দেশটিতে গত কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক প্রতিবাদ।
২০২৩ সালে পুনরায় নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট আন্দ্রি রাজোয়েলিনা এবার সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছেন। বিক্ষোভ সহিংস আকার ধারণ করায় কর্তৃপক্ষ গত বৃহস্পতিবার থেকে রাজধানীতে কারফিউ জারি করেছে।
সোমবার বিক্ষোভকারীরা আন্তানানারিভোর একটি বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে জড়ো হয়ে প্ল্যাকার্ড হাতে বিক্ষোভ শুরু করেন। তারা জাতীয় সংগীতও গান করেন। পরে শহরের অন্যান্য রাস্তা অবরোধ করে ব্যারিকেড তৈরি করেন।
মাদাগাস্কারের টেলিভিশন চ্যানেল ২৪২৪ এমজির ফুটেজে দেখা যায়, পুলিশ টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করছে এবং রাস্তার ব্যারিকেড সরাচ্ছে।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া অনেকেই প্রধানমন্ত্রী ক্রিশ্চিয়ান এনটসে, তার সরকার এবং প্রেসিডেন্ট রাজোয়েলিনার পদত্যাগ দাবি করেন। প্রেসিডেন্ট রাজোয়েলিনা রোববার দেওয়া এক বক্তৃতায় শাসন ব্যবস্থায় কিছু ভুল স্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘যদি কোনো ভুল হয়ে থাকে, আমি তা স্বীকার করছি এবং এখন সবকিছু সংস্কারের উপায় খুঁজছি।’
রাজধানী আনোসিবে এলাকায় ওই বক্তৃতা দেন। গত শুক্রবার ওই এলাকায় বিক্ষোভকারীরা লুটপাট ও ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়েছিল।
মাদাগাস্কারের বিক্ষোভকারীরা নেপালে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত জেন-জি আন্দোলনের প্রতীকী পতাকা ব্যবহার করছেন। নেপালে জেন-জি আন্দোলনের ফলে দেশটির প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলি পদত্যাগ করেছিলেন। এছাড়া কেনিয়ার আন্দোলনের মতোই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে মাদাগাস্কারের বিক্ষোভকারীরা সংগঠিত হচ্ছেন।