ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৫ জুন, ২০২৫

কবে থেকে চাঁদপুরে একদিন আগে ঈদ হয়?

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: জুন ৫, ২০২৫, ০৬:৫৫ পিএম
ঈদের জামাতে মুসল্লিরা। ছবি- সংগৃহীত

সারা দেশে একদিন পরে হলেও চাঁদপুরে ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা একদিন আগেই হয়। জেলাটির প্রায় ৫০টি গ্রামের অর্ধ লাখেরও বেশি মানুষ একদিন আগে ঈদ উদযাপন করে থাকেন।

আগামীকাল শুক্রবারও (৬ জুন) তারা মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে মিল রেখে ঈদ উদযাপন করবেন। এ উপলক্ষে জেলাটির বিভিন্ন স্থানে প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। জামাতের সময়সূচিও প্রকাশ হয়েছে। 

জেলাটিতে কেন, কবে থেকে একদিন আগে ঈদ পালনের প্রথা চালু হলো? কেই-বা চালু করলেন এই প্রথা? খোঁজ নিলে জানা যায়, চাঁদপুরে ১৯২৮ সালে আগাম রোজা রাখাসহ ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা পালনের নিয়ম চালু হয়। সাদ্রা দরবারের প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা ইসহাক চৌধুরী এই রীতি চালু করেন। প্রথাটির প্রায় ৯৬ বছর অতিবাহিত হতে চলেছে। 

মাওলানা ইসহাক চৌধুরী (রহ.) সাদ্রা দরবার শরীফের প্রথম ‘আধ্যাত্নিক মহাপুরুষ বা পীর’। তিনি সাদ্রা হামীদিয়া ফাজিল মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা। এটি বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বিভাগের চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জ উপজেলার একটি আলিয়া মাদ্রাসা। বর্তমানে এটি ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত একটি ফাজিল বা ডিগ্রি সমমানের মাদ্রাসা। সেখানেই তিনি অল্প কিছু মুসল্লি নিয়ে পয়লা শুরু করেন সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে রোজা, ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা ১৯২৮ সালে। পরে তার অনুসারী সংখ্যা বাড়তে থাকে।

বর্তমানে চাঁদপুরে একদিন আগে অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ ঈদ উদযাপন করেন। জেলাটির প্রায় ৫০টিরও বেশি গ্রামে একদিন আগে ঈদ উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।

একদিন আগে ঈদ পালন করা গ্রামগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হাজীগঞ্জ উপজেলার সাদ্রা, সমেশপুর, অলিপুর, বলাখাল, মনিহার, প্রতাপুর, বাসারা, ফরিদগঞ্জ উপজেলার লক্ষ্মীপুর, কামতা, গল্লাক, ভুলাচোঁ, সোনাচোঁ, উভারামপুর, উটতলি, মুন্সিরহাট, কাইতাড়া, মূলপাড়া, বদরপুর, আইটপাড়া, সুরঙ্গচাইল, বালিথুবা, পাইকপাড়া, নূরপুর, সাচনমেঘ, শোল্লা, হাঁসা, গোবিন্দপুর, মতলব উপজেলার দশানী, মোহনপুর, পাঁচানী এবং কচুয়া ও শাহরাস্তি উপজেলাসহ অর্ধশত গ্রাম।

চাঁদপুরে হাজীগঞ্জের সাদ্রা দরবার শরিফের পীর ড. বাকী বিল্লাহ মিশকাত চৌধুরী বলেন, ‘এখানে রোজা ও ঈদ সৌদি আরবকে অনুসরণ করে হয় না; বরং ‘এক দুনিয়া এক চাঁদ’ নিয়ম অনুসারে বিশ্বের যেকোনো দেশে চাঁদ দেখার বিষয়টি নিশ্চিত হলে আমরা রোজা ও ঈদ উদযাপন করে থাকি।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই নিয়ম বাংলাদেশে চালু করেন মরহুম মাওলানা ইসহাক (রহ.)। তিনি ১৯২৮ সাল রোজা, ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা উদযাপনের নিয়ম চালু করেন। তারপর থেকে সেই ধারা দেশের বিভিন্ন দরবার শরিফের পীরের অনুসারী এবং সচেতন মুসল্লিরা পালন করছেন।’

ওই দরবারের পীরজাদা মাওলানা আরিফ চৌধুরী বলেন, ‘শুধু সৌদি আরব নয়, কোরআন ও হাদিসের আলোকে চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে আমরা রোজা পালন, ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা উদযাপন করে থাকি। এ উপলক্ষে কোরবানির পশু ক্রয়সহ আনুষঙ্গিক প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।’