ঢাকা রবিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৫

চীনের সামরিক তৎপরতায় নিরাপত্তা ঝুঁকিতে তাইওয়ান

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: জুলাই ২৬, ২০২৫, ০৮:৪৫ পিএম
তাইওয়ান ঘিরে চীনের সামরিক তৎপরতা। ছবি- সংগৃহীত

পূর্ব-এশিয়ায় নতুন করে সংঘাতের শঙ্কা দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে তাইওয়ান ঘিরে চীনের সামরিক ও গোয়েন্দা তৎপরতা উদ্বেগজনকভাবে বেড়েছে। যার পরিণতি দ্বীপ-রাষ্ট্রটির মিত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীনের সরাসরি সংঘাত বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। শনিবার (২৬ জুলাই) সকাল ৬টা পর্যন্ত দ্বীপটির আশেপাশে ১৭টি চীনা সামরিক বিমান ও সাতটি নৌযান সনাক্ত করা হয়েছে।

তাইওয়ানের জাতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের (এমএনডি) বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে তাইওয়ান নিউজ।

প্রতিবেদনে বলা হয়, এর মধ্যে আটটি বিমান তাইওয়ান প্রণালীর মধ্যবর্তী রেখা অতিক্রম করে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় বিমান প্রতিরক্ষা সনাক্তকরণ অঞ্চলে (এডিআইজেড) প্রবেশ করেছে। প্রতিক্রিয়ায় তাইওয়ানের সশস্ত্র বাহিনী বিমান, নৌযান এবং উপকূলীয় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মোতায়েন করে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেছে।

তাইওয়ানের এমএনডি এক্স-হ্যান্ডেলে জানিয়েছে, ‘আজ সকাল ৬টা পর্যন্ত চীনের পিপালস লিবারেশন আর্মির (পিএলএ) ১৭টি বিমান ও প্ল্যান-এর সাতটি জাহাজ সনাক্ত করা হয়েছে। আটটি বিমান মধ্যরেখা অতিক্রম করেছে। আমরা পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছি।’

এর আগের, দিন শুক্রবারও একই ধরনের তৎপরতা লক্ষ্য করা যায়। এমএনডি জানায়, সেদিন সকাল ৬টা নাগাদ ২৬টি চীনা সামরিক বিমান, সাতটি নৌযান এবং একটি সরকারি জাহাজ তাইওয়ানের সন্নিকটে ট্র্যাক করা হয়েছিল। সেসময়ও তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা বাহিনী সতর্ক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিল।

চলতি মাসে এখন পর্যন্ত ৪৮০ বার চীনা সামরিক বিমান এবং ১৯৮ বার নৌযান ট্র্যাক করেছে তাইওয়ান। ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর থেকে বেইজিং দ্বীপটির চারপাশে বিমান ও নৌযান পাঠিয়ে সামরিক চাপ বাড়াচ্ছে।

বিশ্লেষকদের মতে, এটি চীনের ‘ধূসর অঞ্চল কৌশল’-এর অংশ। মার্কিন গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিএসআইএস এই কৌশলকে সংজ্ঞায়িত করেছে এমন ধারাবাহিক প্রচেষ্টা হিসেবে, যা সরাসরি বৃহৎ শক্তি প্রয়োগ না করেই প্রতিপক্ষের নিরাপত্তা লক্ষ্যকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করে।

তাইওয়ান আনুষ্ঠানিকভাবে চীন প্রজাতন্ত্র (আরওসি) নামে পরিচিত, ১৯৪৯ সাল থেকে স্ব-শাসিত সত্তা হিসেবে পরিচালিত হচ্ছে। তবে চীন ‘এক চীন’ নীতির আওতায় দ্বীপটিকে নিজের ভূখণ্ড দাবি করে এবং মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে পুনর্মিলনের ওপর জোর দিয়ে আসছে।

এই উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতিতে তাইওয়ানের সামরিক বাহিনী সার্বভৌমত্ব রক্ষা ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে উচ্চ সতর্কাবস্থায় রয়েছে। চীনা অনুপ্রবেশের প্রতি তারা নিবিড় নজর রাখছে এবং প্রয়োজনীয় প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছে।