ঢাকা সোমবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

দুর্নীতির বিরুদ্ধে উত্তাল ফিলিপাইন, গ্রেপ্তার দুই শতাধিক

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২২, ২০২৫, ০৩:২২ পিএম
ফিলিপাইনে দুর্নীতিবিরোধী বিক্ষোভে পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ হয়। ছবি- সংগৃহীত

ফিলিপাইনের রাজধানী ম্যানিলায় দুর্নীতির বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছেন বিক্ষোভকারীরা। এরইমধ্যে দুই শতাধিক বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানানো হয়েছে।

স্থানীয় পুলিশের দাবি, শুরুতে বিক্ষোভ শান্তিপূর্ণ থাকলেও ম্যানিলার আয়ালা ব্রিজ ও মেন্ডিওলা এলাকায় পরিস্থিতি হঠাৎ সহিংস হয়ে ওঠে। তিনি বলেন, ‘বিক্ষোভকারীরা ইট-পাথরসহ যা পেয়েছে তাই দিয়ে পুলিশকে আক্রমণ করেছে। শুধু আঘাত করেই থেমে থাকেনি, তারা মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দিয়েছে, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর ও লুটপাট চালিয়েছে।’

পুলিশ আরও জানায়, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২২৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যাদের মধ্যে কয়েকজন অপ্রাপ্তবয়স্ক।

এদিকে, সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত অন্তত ১৩১ জন পুলিশ কর্মকর্তা আহত হয়েছেন। এর মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর।

আল জাজিরার সাংবাদিক বার্নাবি লো জানিয়েছেন, সোমবার সকালে ম্যানিলার রাস্তায় স্বাভাবিকতা ফিরলেও পুলিশি উপস্থিতি ছিল ‘অস্বাভাবিক বেশি’। এরইমধ্যে স্কুল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে এবং অপ্রাপ্তবয়স্কদের জন্য কারফিউ জারি করা হয়েছে। বন্যা নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত অব্যাহত থাকায় আরও বিক্ষোভ হতে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি।

রোববার হাজারো মানুষ বন্যা নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পে ‘ঘোস্ট ইনফ্রাস্ট্রাকচার’ কেলেঙ্কারির প্রতিবাদে রাজধানীর ঐতিহাসিক পার্ক ও গণতন্ত্র স্মৃতিস্তম্ভে বিক্ষোভে অংশ নেন। বিক্ষোভকারীদের অনেকেই শান্তিপূর্ণভাবে অংশগ্রহণ করলেও কয়েকজন আলাদা পথে গিয়ে দেয়ালে গ্রাফিতি আঁকেন, ভবনের কাচ এবং হোটেলে ভাঙচুর চালান। তাদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ টিয়ার গ্যাস ব্যবহার করে।

গত জুলাইয়ে প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ মার্কোস জুনিয়র জাতির উদ্দেশে ভাষণে বন্যা নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পে দুর্নীতির তথ্য প্রকাশের পর থেকে ফিলিপাইনে সাধারণ মানুষের মাঝে ক্ষোভ তৈরি হয়।

ছাত্রনেতা আলথিয়া ট্রিনিদাদ বার্তা সংস্থা এপি’কে বলেন, ‘আমরা দারিদ্র্যে ভুগি, ঘরবাড়ি হারাই, ভবিষ্যৎ হারাই, আর তারা আমাদের টাকায় বিলাসবহুল গাড়ি, বিদেশ ভ্রমণ আর বড় ব্যবসা চালাচ্ছে।’

ফিলিপাইনের অর্থ মন্ত্রণালয়ের হিসেবে, ২০২৩ থেকে ২০২৫ সালের মধ্যে বন্যা নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পে দুর্নীতির কারণে দেশের অর্থনীতি প্রায় ১১৮.৫ বিলিয়ন পেসো (প্রায় ২ বিলিয়ন ডলার) ক্ষতির মুখে পড়েছে।