নয়াদিল্লির প্রক্সি গ্রুপ হয়ে ইসলামাবাদের সাথে সংঘাতে জড়িয়েছে কাবুল, দাবি পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফের। বুধবার (১৫ অক্টোবর) জিও নিউজকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এ মন্তব্য করেন তিনি। বলেন, দিল্লির পুতুলে পরিণত হয়েছে কাবুল। অর্থায়নও হচ্ছে সেখান থেকে। আফগানিস্তান সংঘাতের পরিধি বাড়াতে চাইলে, পাল্টা জবাব দেয়ার পূর্ণ সক্ষমতা ও প্রস্তুতি আছে পাকিস্তানের।
বিগত কয়েকদিন ধরে চলা সামরিক সংঘর্ষ ঘিরে উত্তেজনার মধ্যে পাকিস্তান ও আফগানিস্তান ৪৮ ঘণ্টার অস্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। বুধবার (১৫ অক্টোবর) পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই ঘোষণা দিয়েছে। এই সময়ের মধ্যে উভয় পক্ষই সমস্যার একটি 'ইতিবাচক এবং টেকসই সমাধান' খুঁজে বের করার লক্ষ্যে গঠনমূলক সংলাপে অংশ নেবে।
গত শনিবার পাল্টাপাল্টি সংঘাতের সূচনা হয় দু'দেশের সীমান্তবর্তী এলাকায়। চলে রবিবার সকাল পর্যন্ত। বুধবার আবার বড় ধরনের সহিংসতায় জড়ায় দুই দেশ। এ পর্যন্ত ৫৮ পাকিস্তানি সেনা হত্যার দাবি করেছে কাবুল। বিপরীতে ২শ'রও বেশি তালেবান যোদ্ধাকে হত্যার দাবি ইসলামাবাদের।
নয়াদিল্লির প্রভাব কী
প্রথমবারের মতো ভারত সফরে গেছেন তালেবান সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি। অনেকে পাকিস্তানের সঙ্গে তালেবানের সপ্তাহান্তের সীমান্ত সংঘর্ষের সঙ্গে মুত্তাকির ভারত সফরের যোগসূত্র খুঁজছেন।
চার বছর আগে যুক্তরাষ্ট্র–সমর্থিত সরকারকে উৎখাত করে তালেবান আবার আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলের পর এটাই ঊর্ধ্বতন কোনো তালেবান নেতার প্রথম নয়াদিল্লি সফর। মুত্তাকির ওপর জাতিসংঘের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তবে এক সপ্তাহের জন্য ওই নিষেধাজ্ঞায় ছাড়পত্র পেয়েছেন তিনি।
৯ অক্টোবর মুত্তাকি ভারত সফরে গেছেন, আজ ১৬ অক্টোবর পর্যন্ত সেখানে আছেন তিনি। এই সফরে তিনি ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। ইসলামাবাদ মুত্তাকির এ সফরের ওপর গভীর নজর রাখছে।
গত শতাব্দীর নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝি থেকে কয়েক বছরের আগপর্যন্তও তালেবানকে পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থার প্রক্সি বাহিনী মনে করত ভারত। তালেবান ও তাদের মিত্র সশস্ত্র গোষ্ঠী আফগানিস্তানে ভারতের কূটনৈতিক মিশনে প্রাণঘাতী হামলা চালিয়েছে বলেও অভিযোগ করেছিল ভারত। কিন্তু তালেবান নতুন করে ক্ষমতায় আসার পর পাকিস্তানের সঙ্গে তাদের উত্তেজনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ সুযোগ নিচ্ছে নয়াদিল্লি। মুত্তাকির ভারত সফর এর প্রমাণ।
ইসলামাবাদ বহু বছর ধরে অভিযোগ করছে, নয়াদিল্লি পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখাওয়া ও বেলুচিস্তান প্রদেশে অশান্তি সৃষ্টি করছে। এ জন্য আফগানিস্তানের কয়েকটি সশস্ত্র গোষ্ঠী নয়াদিল্লি থেকে অর্থ ও সহায়তা পাচ্ছে। ভারত এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
কয়েকজন বিশ্লেষক কাবুলে গত বৃহস্পতিবারের বিস্ফোরণ নিয়ে পাকিস্তানের দায় স্বীকার করা বা অস্বীকার না করার অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। পাকিস্তানের এ
অবস্থান তাদের বিশ্বাসযোগ্যতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে বলে মনে করেন ইসলামাবাদভিত্তিক গবেষণা সংস্থা জিওপলিটিক্যাল ইনসাইটসের প্রধান ফাহাদ নাবিল।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন