চলতি বছরের জুনের শুরুতে শান্তি আলোচনা স্থবির হয়ে পড়ার পর নতুন করে রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনায় বসতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে ইউক্রেন। দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি শনিবার (১৯ জুলাই) রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে আগামী সপ্তাহে নতুন দফায় শান্তি আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছেন। এএফপির বরাত দিয়ে জানিয়েছে দ্য গার্ডিয়ান।
তুরস্কের ইস্তাম্বুলে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে দুই দফা আলোচনা অনুষ্ঠিত হলেও যুদ্ধবিরতির বিষয়ে কোনো অগ্রগতি হয়নি। তবে দুই পক্ষ বড় পরিসরে বন্দি বিনিময় ও নিহত সৈন্যদের মরদেহ ফেরতের বিষয়ে একটি চুক্তিতে পৌঁছেছে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে বলেন, ‘জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের সচিব রুস্তেম উমেরভ (সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী) রাশিয়ার সঙ্গে আগামী সপ্তাহে পরবর্তী বৈঠকের প্রস্তাব দিয়েছেন।’ গত সপ্তাহে রুস্তেমকে জাতীয় নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা কাউন্সিলের প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
জেলেনস্কি বলেন, ‘আলোচনার গতি আরও বাড়াতে হবে।’ তিনি আবারও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সরাসরি বৈঠকে বসার প্রস্তুতির কথা জানান। তার ভাষায়, ‘শান্তি, বিশেষ করে স্থায়ী শান্তি নিশ্চিত করতে নেতৃত্ব পর্যায়ের বৈঠক অপরিহার্য।’
ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দোনেৎস্ক ফ্রন্টে রাশিয়া তীব্র আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে। একদিকে তারা বারবার আলোচনা শুরু করার কথা বলছে, অন্যদিকে তাদের সর্বোচ্চ যুদ্ধলক্ষ্যের বিষয়ে কোনো নমনীয়তা দেখাচ্ছে না।
গত মাসে অনুষ্ঠিত আলোচনায় রাশিয়া কঠোর শর্তের একটি তালিকা তুলে ধরেছিল। এর মধ্যে ছিল ইউক্রেনকে আরও ভূখণ্ড ছেড়ে দিতে হবে এবং পশ্চিমা দেশগুলোর দেওয়া সামরিক সহায়তা পুরোপুরি প্রত্যাখ্যান করতে হবে। কিয়েভ এই দাবিগুলো সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য বলে সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছে। তারা জানিয়েছে, মস্কো যদি ছাড় না দেয়, তবে আলোচনার ভবিষ্যৎ নিয়ে সন্দেহ থেকেই যায়।
এদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন রাশিয়াকে ৫০ দিনের মধ্যে শান্তিচুক্তিতে পৌঁছানোর সময়সীমা নির্ধারণ করেন, তখন ক্রেমলিন জানায়, ‘তারা আলোচনায় বসতে প্রস্তুত, নইলে কঠিন নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখি হতে হবে।’
ট্রাম্প ইউক্রেনকে ন্যাটো মিত্রদের মাধ্যমে নতুন সামরিক সহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। কারণ, ইউক্রেনের শহরগুলো ক্রমেই রাশিয়ার বিমান হামলার শিকার হচ্ছে। শনিবার ইউক্রেনজুড়ে রুশ হামলায় আরও তিনজন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন।