ঢাকা রবিবার, ১০ আগস্ট, ২০২৫

পূর্ব ইউক্রেনের বিনিময়ে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পুতিনের

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: আগস্ট ৯, ২০২৫, ১১:৫৯ পিএম
ভ্লাদিমির পুতিন ও স্টিভ উইটকফ। ছবি- সংগৃহীত

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধ বন্ধের জন্য নতুন কূটনৈতিক আলোচনা শুরু করার প্রস্তাব দিয়েছেন। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পুতিন প্রস্তাব করেছেন, ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চল ডনবাস এবং অন্যান্য দখলকৃত ভূখণ্ডের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির বিনিময়ে যুদ্ধবিরতি করা হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ১৫ আগস্ট আলাস্কায় পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে জানান। তবে বৈঠকের বিস্তারিত তথ্য এখনও জানা যায়নি। ক্রেমলিনও এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, তাদের ভূখণ্ড ছেড়ে দেওয়া সম্ভব নয় এবং যেকোনও শান্তি আলোচনা করতে হলে ইউক্রেনকে অবশ্যই অংশগ্রহণ করতে হবে। তিনি বলেন, ইউক্রেনকে বাদ দিয়ে নেওয়া কোনো সিদ্ধান্তই শান্তি আনবে না।

ইউরোপীয় নেতারা পুতিনের প্রস্তাবে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। তাদের মতে, এটি মূলত ইউক্রেনকে শুধু পূর্বাঞ্চল হস্তান্তরের আহ্বান, কিন্তু রাশিয়া থেকে যুদ্ধ বন্ধের কোনও বড় অঙ্গীকার নেই।

পুতিনের প্রস্তাব বুধবার মস্কোয় মার্কিন বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফকে দেওয়া হয়েছে। আলোচনার প্রথম ধাপে ইউক্রেনকে ডনবাস থেকে সেনা প্রত্যাহার করতে হবে এবং যুদ্ধের ফ্রন্টলাইন স্থগিত থাকবে। দ্বিতীয় ধাপে ট্রাম্প ও পুতিন একটি শান্তি চুক্তির খসড়া তৈরি করবেন, যা পরবর্তীতে জেলেনস্কির সঙ্গে আলোচনা হবে।

রাশিয়া ডনবাসের ডনেস্ক ও লুহানস্ক অঞ্চল ছাড়াও ২০১৪ সালে দখল করা ক্রিমিয়া এবং দক্ষিণাঞ্চলের জাপোরিজ্জিয়া ও খেরসনের দখলকৃত অংশের সার্বভৌমত্ব স্বীকৃতির দাবিও করেছে।

হোয়াইট হাউজের মুখপাত্র ক্যারোলাইন লেভিট বলেছেন, তারা সংবেদনশীল কূটনৈতিক আলোচনার প্রতি সম্মান জানিয়ে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য নিয়ে এখনই মন্তব্য করবে না।

ইউক্রেনের সংবিধান অনুসারে, প্রেসিডেন্ট একতরফাভাবে ভূখণ্ড ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন না। জেলেনস্কি বলছেন, পূর্ণ ও শর্তহীন যুদ্ধবিরতির পরই সীমান্ত সংক্রান্ত আলোচনায় বসা সম্ভব।

পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড টাস্ক ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় সংঘাত স্থগিত হওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে সতর্ক আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেন, হয়তো যুদ্ধ শেষ হবে না, তবে সংঘাত কিছুটা শান্ত হতে পারে।

তবে, চলমান আলোচনার মাঝেই রুশ বাহিনী ইউক্রেনের ওপর আক্রমণ বাড়িয়েছে। শুক্রবার ভোরে কিয়েভের কাছে বুচায় রাশিয়ার বোমাবর্ষণ হয়, যেখানে ২০২২ সালে তারা গণহত্যা চালিয়েছিল।

রুশ সরকার জানিয়েছে, পুতিন এই প্রস্তাবটি ভারত, চীন, বেলারুস, দক্ষিণ আফ্রিকা ও তুরস্কসহ কয়েকটি দেশের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। তবে ইউক্রেন ও ইউরোপীয় অংশীদাররা এটিকে যুদ্ধবিরতির আড়ালে কৌশলগত চাল হিসেবে দেখছেন।