মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের করা মামলায় সমঝোতার অংশ হিসেবে ইউটিউব প্রায় আড়াই কোটি ডলার পরিশোধে সম্মত হয়েছে। ২০২১ সালে ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটল হিলে হামলার পর তার চ্যানেল স্থগিত করায় ট্রাম্প এ মামলা করেছিলেন। সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।
ইউটিউব জানায়, সহিংসতায় উসকানি দেওয়ার নীতি লঙ্ঘনের অভিযোগে ট্রাম্পের চ্যানেল স্থগিত করা হয়েছিল। তবে সমঝোতার ফলে মামলা এখন খারিজ করা হয়েছে। গুগল এ বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
ঘটনার এক সপ্তাহ আগে ইউটিউব ঘোষণা দিয়েছিল, কোভিড-১৯ বা ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানোর অভিযোগে যেসব নির্মাতার চ্যানেল নিষিদ্ধ হয়েছিল, তাদের আবার ফিরে আসার সুযোগ দেওয়া হবে।
ফেসবুকের মূল কোম্পানি মেটা এ বছরের জানুয়ারিতে ট্রাম্পের সঙ্গে ২৫ মিলিয়ন ডলারের সমঝোতা করে। আর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স ফেব্রুয়ারিতে ১০ মিলিয়ন ডলারে আরেকটি মামলা মীমাংসা করে। মেটার অর্থের বেশির ভাগই ট্রাম্পের প্রেসিডেন্টিয়াল লাইব্রেরি ফান্ডে যাচ্ছে। আর ইউটিউব থেকে পাওয়া অর্থের মধ্যে ২২ মিলিয়ন ডলার ট্রাম্প বরাদ্দ করেছেন ওয়াশিংটন ডিসির ন্যাশনাল মল পুনর্নির্মাণ এবং হোয়াইট হাউসের একটি বেলরুম নির্মাণে সহায়তার জন্য। ওই বিলাসবহুল হলরুম নির্মাণে প্রায় ২০০ মিলিয়ন ডলার খরচ হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
প্রথমে মামলাগুলো করেছিলেন ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ আইনজীবী জন কোয়াল, যিনি এখন ইউক্রেন ও বেলারুশে ট্রাম্পের বিশেষ দূতের ডেপুটি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি মন্তব্য করেন, ‘যদি ট্রাম্প পুনর্নির্বাচিত না হতেন, তবে এই মামলাগুলো এক হাজার বছর আদালতে ঝুলে থাকত।’
কোয়াল সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানকে দেওয়া এক ই-মেইলে লেখেন, ‘ট্রাম্প ছিলেন আদর্শ ক্লায়েন্ট। আমরা খুশি যে, ২০২১ সালের জুলাইয়ে করা মামলাগুলো ৬০ মিলিয়ন ডলারে শেষ হলো। আমরা অর্থ পেয়েছি এবং প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর আচরণেও পরিবর্তন এসেছে।’
এর আগে ২০২৩ সালে ইউটিউবের বিরুদ্ধে করা মামলা খারিজ হয়ে গিয়েছিল। তবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্প জয়ী হওয়ার পর তার আইনজীবীরা মামলা পুনরায় শুরু করার আবেদন করেন। এর আগে তিনটি মামলাই আদালতে টিকে থাকার মতো অবস্থায় ছিল না। ২০২২ সালে ফেডারেল বিচারক ‘টুইটার’র মামলা খারিজ করেন, আর মেটা ও ইউটিউবের মামলাগুলো স্থগিত হয়ে যায়।
ইউটিউব ২০২১ সালের ১২ জানুয়ারি ট্রাম্পের চ্যানেল ৭ দিনের জন্য স্থগিত করেছিল। ওইদিন তিনি এক ভিডিওতে দাবি করেছিলেন, ক্যাপিটল হামলার আগে দেওয়া তার ভাষণ ছিল ‘সম্পূর্ণ যথাযথ’। এরপর ইউটিউব অনির্দিষ্টকালের জন্য নিষেধাজ্ঞা বাড়িয়ে দেয়।
তবে ২০২৩ সালের মার্চে ট্রাম্প দ্বিতীয়বার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দেওয়ার পর ইউটিউব তার চ্যানেল ফিরিয়ে দেয়।
চ্যানেল ফিরে পাওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ট্রাম্প পোস্ট করেন, ‘আমি ফিরে এসেছি!’