ঢাকা শনিবার, ১২ জুলাই, ২০২৫

ট্রাম্পের এক ঘোষণাতেই ঘুম হারাম মোদির!

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: জুলাই ৯, ২০২৫, ০৩:৫৬ পিএম
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ গ্রাফিক্স

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের ঘোষণায় গভীর উদ্বেগের মধ্যে পড়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। মার্কিন বাজারে বাংলাদেশের পণ্যের পাশাপাশি ভারতীয় পণ্যের ওপরও অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ট্রাম্প, যা ভারতের রপ্তানি ও অর্থনৈতিক খাতে ব্যাপক প্রভাবের শঙ্কা তৈরি হয়েছে। এতেই রীতিমত ঘুম হারাম হয়ে গেছে মোদির।

রপ্তানি হ্রাসের শঙ্কা

যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন ধরেই ভারতের অন্যতম বৃহৎ রপ্তানি গন্তব্য। ভারতের ইস্পাত, বস্ত্র, ওষুধ ও তাম্রসহ একাধিক খাত যুক্তরাষ্ট্রমুখী। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের রপ্তানি ছিল প্রায় ৭৭ বিলিয়ন ডলার। কিন্তু শুল্ক আরোপ হলে ভারতীয় পণ্যগুলোর প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা কমে যাবে। বিশেষ করে টেক্সটাইল, জুতা, এবং হস্তশিল্প—যেগুলো মূলত মধ্য ও নিম্নবিত্ত শ্রমনির্ভর সেই খাতগুলোতে উৎপাদন ও কর্মসংস্থানে ধাক্কা আসবে।

বৈদেশিক মুদ্রা আয়ে প্রভাব

রপ্তানি হ্রাস পেলে কমে আসবে বৈদেশিক মুদ্রার প্রবাহ। এতে ভারতীয় রুপির মান দুর্বল হওয়ার পাশাপাশি আমদানি খরচ বেড়ে যাবে, বিশেষ করে জ্বালানি ও প্রযুক্তিনির্ভর খাতে। দীর্ঘমেয়াদে এটি ভারতে মূল্যস্ফীতির চাপ বাড়াতে পারে।

কূটনৈতিক উত্তেজনার ইঙ্গিত

এই বাণিজ্য বিরোধ দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কেও ছেদ পড়তে পারে। কোয়াড, ইন্দো-প্যাসিফিক নিরাপত্তা জোট এবং ডিফেন্স লাইনসহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সহযোগিতায় ভারতে যুক্তরাষ্ট্র একে-অপরের অংশীদার। তবে বাণিজ্য দ্বন্দ্ব গভীর হলে সেই অংশীদারিত্বে শিথিলতা আসতে পারে।

ভারত সরকারের প্রস্তুতি

জানা গেছে, ভারতে বিষয়টি নিয়ে কূটনৈতিক স্তরে আলোচনা শুরু হয়েছে। দেশটির বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত খাতগুলোর তালিকা প্রস্তুত করেছে এবং বিকল্প বাজার খোঁজার কৌশল নির্ধারণে কাজ শুরু করেছে। অন্যদিকে, ‘আত্মনির্ভর ভারত’ কর্মসূচিকে সামনে রেখে স্থানীয় উৎপাদন ও অভ্যন্তরীণ বাজার জোরদার করতে সরকার বাড়তি প্রণোদনা ঘোষণা করতে পারে বলেও আভাস পাওয়া গেছে।

ভারতীয় অর্থনীতিবিদ ড. রণজয় ঘোষ বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক পদক্ষেপ যদি দীর্ঘস্থায়ী হয়, তবে তা শুধু ভারতের রপ্তানি নয়, কর্মসংস্থান ও রাজস্বেও নেতিবাচক প্রতিফলন ফেলবে। তবে ভারত এখন বহুমুখী বাণিজ্য চুক্তির পথে হাঁটছে, যা দীর্ঘমেয়াদে এ চাপ মোকাবিলায় সাহায্য করতে পারে।