ঢাকা মঙ্গলবার, ২৬ আগস্ট, ২০২৫

স্বামীকে লিভার দিলেন স্ত্রী, অস্ত্রোপচারের পর দুজনেরই মৃত্যু

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: আগস্ট ২৫, ২০২৫, ১০:০২ পিএম
বাপু কোমকার ও তার স্ত্রী কামিনী। ছবি- সংগৃহীত

ভারতে মহারাষ্ট্রের পুনেতে এক হৃদয়বিদারক ও চাঞ্চল্যকর ঘটনার পর ভারতের চিকিৎসা নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। স্ত্রী নিজের লিভারের (যকৃৎ) একটি অংশ স্বামীকে দান করেছিলেন, কিন্তু লিভার প্রতিস্থাপনের অস্ত্রোপচারের পর দুজনই প্রাণ হারালেন।

১৫ আগস্ট অস্ত্রোপচার হয়, স্বামী বাপু কোমকারের শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে এবং মাত্র দুই দিন পর তিনি মারা যান। তারপর ২১ আগস্ট স্ত্রী কামিনীও মারাত্মক সংক্রমণের কবলে পড়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

এই ঘটনায় পুনের সহ্যাদ্রি বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে মহারাষ্ট্র স্বাস্থ্য অধিদপ্তর নোটিশ জারি করেছে। স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের উপ-পরিচালক নাগনাথ ইয়েমপাল্লে জানিয়েছেন, হাসপাতালকে লিভার প্রতিস্থাপন প্রক্রিয়া সম্পর্কিত সব তথ্য, রোগী ও দাতার তথ্য, ভিডিও রেকর্ডিং এবং চিকিৎসাপদ্ধতির বিস্তারিত প্রতিবেদন সোমবার (২৫ আগস্ট) সকাল ১০টার মধ্যে জমা দিতে বলা হয়েছে।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, অস্ত্রোপচার নিয়ম অনুযায়ী করা হয়েছিল। তারা বলেন, ‘রোগী বাপু কোমকার উচ্চঝুঁকিপূর্ণ ছিলেন এবং নানা শারীরিক জটিলতা ছিল। লিভার প্রতিস্থাপন জটিলতম শল্যচিকিৎসার মধ্যে একটি। আমরা রোগী ও দাতাকে আগেই উচ্চ ঝুঁকির বিষয়ে সম্পূর্ণ তথ্য জানিয়েছিলাম।’

অস্ত্রোপচারের পর বাপু কোমকার কার্ডিওজেনিক শক অবস্থায় পড়েন এবং চিকিৎসা সত্ত্বেও তাকে বাঁচানো যায়নি। প্রথমদিকে দাতা কামিনী সুস্থ ছিলেন, কিন্তু পরে সংক্রমণের কারণে সেপটিক শক দেখা দেয় এবং একাধিক অঙ্গপ্রত্যঙ্গ অকেজো হয়ে পড়ে। অত্যাধুনিক চিকিৎসা সত্ত্বেও সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি।

পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, চিকিৎসায় গাফিলতির কারণে এই মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা তদন্তে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করছে এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নোটিশ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহ করবে।

এ ঘটনায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, হাসপাতাল ও পরিবারের মধ্যে তদন্ত প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এ ঘটনায় চিকিৎসা নিরাপত্তা ও দায়িত্বশীলতা নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ স্বচ্ছতা বজায় রেখে সকল তথ্য প্রদান করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

সূত্র: এনডিটিভি