ইসরায়েলি বিমান হামলায় একাধিক শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা ও পরমাণু বিজ্ঞানী নিহত হওয়ার পর শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে ইরানের জামকারান এলাকার একটি প্রধান মসজিদের মিনারে লাল পতাকা ওড়ানো হয়েছে।
ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক রাজধানী হিসেবে পরিচিত এই এলাকায় লাল পতাকা ওড়ানোকে যুদ্ধ ঘোষণার প্রতীক হিসেবে দেখা হচ্ছে।
ইরানে এই লাল পতাকা অতীতে শুধু একবারই ওড়ানো হয়েছিল—২০২০ সালে কাসেম সোলাইমানি হত্যার পর। এবার দ্বিতীয়বারের মতো তা ওড়ানো হলো। রাজনৈতিক ও সামরিক বিশ্লেষকদের মতে, সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আল খামেনির নির্দেশে এই প্রতীকী প্রতিশোধের বার্তা দেওয়া হয়েছে।
ইসলামি ঐতিহ্যে ও ইতিহাসে লাল পতাকা মূলত ‘অব্যবহৃত রক্তের প্রতিশোধের প্রতীক’ হিসেবে বিবেচিত। অতীতের ইরানি শাসকরাও যুদ্ধ বা প্রতিশোধের আগাম ইঙ্গিত দিতে মসজিদে লাল পতাকা উত্তোলন করতেন।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই প্রতীকী লাল পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে ইরান যুদ্ধের প্রস্তুতির বার্তা দিচ্ছে। এটি কেবল প্রতিশোধের ইঙ্গিত নয়, বরং মধ্যপ্রাচ্যে আরেকটি সম্ভাব্য সামরিক সংঘাতের পূর্বাভাসও বটে।
ইসরায়েলের ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ নামের সাম্প্রতিক বিমান হামলায় ইরানের বহু গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ও পরমাণু খাতের ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।
হামলায় নিহত ইরানের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাদের মধ্যে রয়েছেন- সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান জেনারেল মোহাম্মদ বাঘেরি, ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কোরের প্রধান জেনারেল হোসেইন সালামি, খাতাম আল-আনবিয়া সেন্ট্রাল হেডকোয়ার্টার কমান্ডার জেনারেল ঘোলামালি রশীদ।
নিহত পরমাণু বিজ্ঞানীদের মধ্যে রয়েছেন- সাবেক পারমাণবিক শক্তি সংস্থার প্রধান ড. ফেরেয়দুন আব্বাসি, ইসলামিক আজাদ ইউনিভার্সিটির প্রেসিডেন্ট ড. মোহাম্মদ মাহদি তেহরানচি, আব্দোলহামিদ মিনৌচেহর, আহমাদ রেজা জোলফাঘারি, আমিরহোসেইন ফেকহি। এ ছাড়া অজ্ঞাত একজন বিজ্ঞানী রয়েছেন, যার পদবি শুধু ‘মোতাল্লেবিজাদেহ’ হিসেবে প্রকাশ করা হয়েছে।
তারা সবাই তেহরানের শহীদ বেহেশতি ইউনিভার্সিটির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং পারমাণবিক কর্মসূচিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতেন।