ঢাকা শনিবার, ১৪ জুন, ২০২৫

ইসরাইলি হামলায় শহীদ ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষা প্রধান

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: জুন ১৩, ২০২৫, ১০:৫৫ পিএম
শহীদ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আমির আলী হাজিজাদেহ। ছবি - সংগৃহীত

তেহরানে ইসরাইলি বাহিনীর চালানো সামরিক অভিযানে ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পসের (আইআরজিসি) এরোস্পেস ফোর্সের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আমির আলী হাজিজাদেহ শহীদ হয়েছেন। 

আজ ভোররাতে তেহরানের একটি আইআরজিসি কেন্দ্রে এই হামলায় এই বর্ষীয়ান কমান্ডারসহ বাহিনীর বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সদস্য প্রাণ হারান বলে জানায় আইআরজিসি’র জনসংযোগ বিভাগ।

আইআরজিসির বিবৃতিতে জানানো হয়, ‌‘আমাদের প্রিয় দেশের এই বীর কমান্ডার গত ১৬ বছর ধরে আইআরজিসির এরোস্পেস ফোর্সের নেতৃত্ব দিয়ে ইরানের প্রতিরোধ ক্ষমতা, প্রতিরক্ষা শক্তি এবং ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তির অগ্রগতিতে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলেন। জিহাদি চেতনা, সততা, বুদ্ধিমত্তা ও আন্তরিকতার সঙ্গে তিনি এই বাহিনীকে শত্রুর চোখে কাঁটা ও দেশের প্রতিরক্ষার অন্যতম স্তম্ভে পরিণত করেন।’

ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির সঙ্গে শহীদ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আমির আলী হাজিজাদেহ। ছবি - সংগৃহীত

একই বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‌‘এই শহীদ কমান্ডার এবং তার বিশ্বস্ত সহযোদ্ধাদের শাহাদাত ইহুদিবাদী শাসকদের সন্ত্রাসী প্রকৃতি এবং ইসলামি বিপ্লবের ফিল্ড কমান্ডারদের প্রতি তাদের ভয় ও ঘৃণার বহিঃপ্রকাশ। এই অপরাধ ইরানি জাতির অবিচল পথকে ব্যাহত করবে না, বরং প্রতিশোধের অঙ্গীকার ও মুজাহিদিনদের গৌরবময় পথচলায় আমাদের প্রতিজ্ঞাকে আরও দৃঢ় করবে।’

ইরানভিত্তিক একটি গণমাধ্যম জানায়, ‌‘শুক্রবার ভোররাতে একটি ভূগর্ভস্থ কমান্ড সেন্টারে লক্ষ্য করে হামলা করা হয়। সেখানে হাজিজাদেহ ও তার শীর্ষ সহযোগীরা বৈঠক করছিলেন। হামলায় পুরো সেন্টারটি ধ্বংস হয়ে যায়।’

অন্যদিকে ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনী আইডিএফ দাবি করে, ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ নামের এই হামলা তারা চালায় ভোররাতে, যার প্রথম ধাপে অংশ নেয় প্রায় ২০০ ইসরাইলি যুদ্ধবিমান।

হামলা চালানো হয় ইরানের শতাধিক গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায়, যার মধ্যে ছিল পরমাণু স্থাপনা, ব্যালিস্টিক মিসাইল ঘাঁটি, সামরিক কমপ্লেক্স ও আকাশ প্রতিরক্ষা কেন্দ্র।

আইডিএফ আরও দাবি করে, ইরানের দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার নেতৃত্বে ছিলেন হাজিজাদেহ, যিনি গত বছর এপ্রিল ও অক্টোবরে ইসরাইলে হামলার পরিকল্পনার মূল কারিগর ছিলেন।

হামলায় নিহতদের স্মরণে এবং হাজিজাদেহর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ইরানজুড়ে শোক পালিত হচ্ছে। তাকে ঘিরে ইরানি জনগণের আবেগ তুঙ্গে। বহু মানুষ তাকে ইসলামি বিপ্লবের অন্যতম প্রতিরোধ-প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করতেন।

শুক্রবারের এই আক্রমণকে এখন পর্যন্ত ইরানের মাটিতে ইসরাইলের সবচেয়ে বড় সামরিক অভিযান হিসেবে দেখা হচ্ছে। হামলার কারণে ইরানজুড়ে সামরিক প্রস্তুতি জোরদার করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক মহলে আবারও মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনা নিয়ে শঙ্কা বাড়ছে।