মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কাতারে ইসরায়েলি হামলার পর জরুরি বৈঠকে বসেছেন আরব ও ইসলামি দেশগুলোর প্রধানরা। দোহায় অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনে কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বিশ্বাসঘাতকতার অভিযোগ আনেন। তিনি বলেন, দোহায় হামাসের ওপর হামলা চালিয়ে গাজা যুদ্ধবিরতি প্রচেষ্টা ব্যাহত করার চেষ্টা করছে ইসরায়েল। তেল আবিব স্পষ্টতই বিশ্বাসঘাতকতা করে কাপুরুষোচিত আঘাত হেনেছে।
সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) আরব-ইসলামিক শীর্ষ সম্মেলনের উদ্বোধনী বক্তব্যে শেখ তামিম এ অভিযোগ করেন। কাতারে হামাস নেতাদের লক্ষ্য করে চালানো বৃহৎ আক্রমণের পর এই জরুরি শীর্ষ সম্মেলন আহ্বান করা হয়। খবর আল-জাজিরার।
কাতারের আমির বলেন, দেশটি একটি মধ্যস্থতাকারী রাষ্ট্র হিসেবে গাজায় ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে পরিচালিত ধ্বংসাত্মক যুদ্ধ, যা এখন গণহত্যায় রূপ নিয়েছে, তার অবসানে কাজ করে যাচ্ছে। মিশর ও যুক্তরাষ্ট্রসহ সহযোগী দেশগুলোর সহায়তায় ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে আলোচনায় অগ্রগতি হয়েছে, যার ফলে বহু জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া সম্ভব হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, নাগরিক ও বাসিন্দারা বিস্মিত হয়েছেন, কারণ এই আক্রমণ শুধু একটি রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব ও আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘনই নয়, বরং ছিল এক ধরনের কাপুরুষোচিত আগ্রাসন। কিন্তু ইসরায়েল যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার জন্য তার একগুঁয়েমি ও জেদ অব্যাহত রেখেছে।
তার ভাষায়, ‘যে ব্যক্তি অধ্যবসায় ও পরিকল্পিতভাবে সেই পক্ষকে হত্যা করার চেষ্টা করে যার সঙ্গে সে আলোচনায় বসেছে, তার উদ্দেশ্য স্পষ্টতই আলোচনা ব্যর্থ করা। তাদের কাছে আলোচনা আসলে যুদ্ধেরই অংশ।’
শেখ তামিম অভিযোগ করেন, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু আরব অঞ্চলকে ‘ইসরায়েলি প্রভাবের বলয়ে পরিণত করার স্বপ্ন দেখছেন, যা এক বিপজ্জনক বিভ্রম’।
এএফপির প্রতিবেদন অনুযায়ী, শীর্ষ সম্মেলনের খসড়া চূড়ান্ত বিবৃতিতে সতর্ক করা হয়েছে যে, ইসরায়েলের নৃশংস আগ্রাসন ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিককরণের পথে অর্জিত অগ্রগতিকে হুমকির মুখে ফেলেছে। এতে বিদ্যমান চুক্তির পাশাপাশি ভবিষ্যৎ সম্ভাব্য চুক্তিগুলোও বিপন্ন হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়।
উল্লেখ্য, ইসরায়েল ও তার প্রধান মিত্র যুক্তরাষ্ট্র ২০২০ সালের আব্রাহাম চুক্তি সম্প্রসারণের চেষ্টা করছে। ওই চুক্তির আওতায় সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন ও মরক্কো ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করে।
সম্মেলন চলাকালে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ইসরায়েল সফরে ছিলেন, যা ওয়াশিংটনের অবিচল সমর্থনের প্রদর্শন হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এক মার্কিন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, রুবিও মঙ্গলবার কাতার সফর করবেন। দেশটি যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবেও পরিচিত।
এর আগে, কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আব্দুল রহমান আল থানি প্রস্তুতিমূলক বৈঠকে বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দ্বিমুখী নীতি বন্ধ করার এবং ইসরায়েলকে তার সব অপরাধের জন্য জবাবদিহি করানোর সময় এসেছে।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন