অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর অব্যাহত হামলায় একদিনেই প্রাণ হারিয়েছেন কমপক্ষে ৮৫ জন ফিলিস্তিনি। পাশাপাশি আরও প্রায় আড়াই শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। এ নিয়ে চলমান হামলায় গাজায় মোট নিহতের সংখ্যা প্রায় ৫৩ হাজার ৮০০ জনে পৌঁছেছে।
শুক্রবার (২৩ মে) আল জাজিরা এবং তুরস্কভিত্তিক বার্তাসংস্থা আনাদোলু পৃথক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
আল জাজিরার বরাত দিয়ে জানানো হয়, বৃহস্পতিবার (২২ মে) ভোর থেকে শুরু হওয়া বিমান ও স্থল হামলায় অন্তত ৮৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হন। স্থানীয় চিকিৎসা সূত্রগুলো জানায়, হতাহতের সংখ্যা প্রতি ঘণ্টায় বাড়ছে এবং অনেক আহত ব্যক্তির অবস্থা আশঙ্কাজনক।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, শুধু গত ২৪ ঘণ্টায় ১০৭টি মৃতদেহ হাসপাতালে পৌঁছেছে, আহত হয়েছে আরও ২৪৭ জন। ফলে এখন পর্যন্ত আহতের মোট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ২২ হাজার ১৯৭ জনে। মন্ত্রণালয় আরও জানায়, ‘ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তাঘাটে এখনও বহু লাশ পড়ে রয়েছে। উদ্ধারকর্মীরা নিরাপত্তাজনিত কারণে সেখানে পৌঁছাতে পারছেন না।’
অন্যদিকে, গাজার বিভিন্ন অঞ্চলে চরম খাদ্যসংকটে মৃত্যু হয়েছে আরও ২৯ জনের, যাদের মধ্যে বেশিরভাগই শিশু ও বৃদ্ধ। এসব মৃত্যু ‘অনাহার-সম্পর্কিত’ বলে নিশ্চিত করেছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। বর্তমানে হাজার হাজার মানুষ চরম অপুষ্টি ও মৃত্যুঝুঁকিতে রয়েছেন।
২০২৫ সালের ১৮ মার্চ থেকে ইসরায়েল ফের নতুন করে গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে। এই সময়ের মধ্যে আরও ৩ হাজার ৬১৩ জন নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন ১০ হাজারের বেশি মানুষ। এর ফলে চলতি বছরের জানুয়ারিতে হওয়া যুদ্ধবিরতি এবং বন্দি বিনিময় চুক্তি কার্যত ভেঙে পড়েছে।
এর আগে ২০২৪ সালের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) গাজায় যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ও তৎকালীন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।
অন্যদিকে, গাজায় ইসরায়েলি অভিযানকে ‘গণহত্যা’ হিসেবে আখ্যায়িত করে এখনো আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) মামলাও চলমান রয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :