ঢাকা বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই, ২০২৫

অস্ট্রেলিয়ায় ১৬ বছরের কম বয়সিদের জন্য নিষিদ্ধ ইউটিউব

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: জুলাই ৩০, ২০২৫, ০১:৩৭ পিএম
অস্ট্রেলিয়ায় ১৬ বছরের কম বয়সিদের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে ইউটিউব। ছবি- সংগৃহীত

অস্ট্রেলিয়ায় ১৬ বছরের কম বয়সি শিশু-কিশোরদের জন্য সোশ্যাল মিডিয়া নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হতে যাচ্ছে এবং সর্বশেষ ঘোষণায় ইউটিউবকেও এর আওতায় আনা হয়েছে। সংবাদমাধ্যম বিবিসি বুধবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, এর আগে ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম ইউটিউবকে নিষেধাজ্ঞা থেকে বাদ দেওয়ার কথা থাকলেও সরকার সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে। এই নিষেধাজ্ঞা আগামী ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হবে এবং এতে টিকটক, ইনস্টাগ্রাম, ফেসবুক, এক্স ও স্ন্যাপচ্যাটও অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

নিষেধাজ্ঞার অধীনে শিশু-কিশোররা ইউটিউব ভিডিও দেখতে পারবে, তবে তারা কোনো অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবে না।

গুগলের মালিকানাধীন ইউটিউব দাবি করেছে, এটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কোনো প্ল্যাটফর্ম নয়। বরং এটি অস্ট্রেলিয়ার শিশু-কিশোরদের জন্য মূল্যবান ও উপকারী।

অস্ট্রেলিয়ার ই-সেফটি কমিশনার জুলি ইনম্যান গ্রান্ট গত মাসে ইউটিউবকে নিষেধাজ্ঞায় অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করেন, কারণ ১০ থেকে ১৫ বছর বয়সিদের মধ্যে ‘ক্ষতিকর কনটেন্ট’ দেখার ক্ষেত্রে ইউটিউব ছিল সবচেয়ে বেশি উল্লিখিত প্ল্যাটফর্ম।

প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ বলেন, ‘সোশ্যাল মিডিয়া আমাদের শিশুদের ক্ষতি করছে এবং আমি অস্ট্রেলিয়ার অভিভাবকদের জানাতে চাই—আমরা তাদের পাশে আছি। এই নিষেধাজ্ঞা একমাত্র সমাধান নয়, তবে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনবে।’

এ নিষেধাজ্ঞাকে স্বাগত জানিয়ে যোগাযোগমন্ত্রী আনিকা ওয়েলস বলেন, ‘এটি এমন যেন আপনি আপনার সন্তানকে সাঁতার শেখাচ্ছেন খোলা সমুদ্রে, যেখানে ঢেউ আর হাঙরের ভয়। এর তুলনায় স্থানীয় সুইমিং পুল অনেক নিরাপদ। আমরা সমুদ্র নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না, কিন্তু হাঙরদের নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। তাই আমরা কোনো আইনি হুমকিতে ভয় পাব না।’

এই নিষেধাজ্ঞা থেকে কিছু অ্যাপ ছাড় দেওয়া হবে, যেমন অনলাইন গেমিং, মেসেজিং, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যভিত্তিক অ্যাপ। কারণ হিসেবে জানানো হয়, এই অ্যাপগুলো ১৬ বছরের কম বয়সিদের জন্য তুলনামূলকভাবে কম ক্ষতিকর বলে বিবেচিত হয়েছে।

নতুন নিয়ম অনুযায়ী, প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোকে ১৬ বছরের নিচের ব্যবহারকারীদের অ্যাকাউন্ট নিষ্ক্রিয় করতে হবে এবং নতুন অ্যাকাউন্ট খোলা বন্ধ করতে হবে। কোনো ধরনের ফাঁকফোকর বা ভুল সংশোধন না করলে, প্রতিষ্ঠানগুলোকে সর্বোচ্চ ৫ কোটি অস্ট্রেলিয়ান ডলার (প্রায় ৩২.৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) জরিমানা করা হতে পারে।

এই নিষেধাজ্ঞার বিস্তারিত নিয়মাবলী বুধবার ফেডারেল পার্লামেন্টে উপস্থাপন করা হবে বলে জানানো হয়েছে।

ইতোমধ্যে নরওয়ে একই ধরনের নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দিয়েছে এবং যুক্তরাজ্যও এ ধরনের উদ্যোগ বিবেচনা করছে।