ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে শান্তি চুক্তির ক্ষেত্রে রাশিয়া উল্লেখযোগ্য ছাড় দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স। বলেন, যদিও সংঘাত অবসানের কোনো স্পষ্ট চিহ্ন দেখা যায়নি, তবু তিনি বিশ্বাস করেন যে শান্তি প্রক্রিয়ায় অগ্রগতি হচ্ছে। সোমবার (২৫ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
এলএনবিসি’র ‘মিট দ্য প্রেস উইথ ক্রিস্টেন ওয়েকার’ অনুষ্ঠানে ভাইস প্রেসিডেন্ট ভ্যান্স বলেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন কয়েকটি ছাড় দিয়েছেন, যার মধ্যে অন্যতম হলো, ভবিষ্যতে রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ইউক্রেনকে নিরাপত্তা গ্যারান্টি প্রদান করা।
ভ্যান্সের মতে, সাড়ে তিন বছর ধরে চলা এই সংঘাতের মধ্যে প্রথমবার রাশিয়া প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে এতো গুরুত্বপূর্ণ ছাড় দিয়েছে। যার মধ্যে অন্যতম কিয়েভে কোনো পুতুল সরকার বসাতে চায় না মস্কো। যদিও শুরুতে তাদের মূল দাবি ছিল এটা। পাশাপাশি তারা ইউক্রেনের ভূখণ্ডের অখণ্ডতার জন্য কিছু নিরাপত্তা গ্যারান্টির কথা স্বীকার করেছে।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে সর্বাত্মক হামলা শুরু করে রাশিয়া। সাড়ে তিন বছর ধরে চলা এই সংঘাতের ফলে হাজার হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন। মূলত যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার দ্বিতীয় মেয়াদ শুরুর পর থেকেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থামানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
এদিকে রাশিয়ার আক্রমণ বন্ধের শর্তে পুতিন চেয়েছেন যে ইউক্রেন পূর্বাঞ্চলীয় ডনবাস অঞ্চল ছেড়ে দিক, ন্যাটো যোগদানের আকাঙ্ক্ষা ত্যাগ করুক, নিরপেক্ষ থাকুক এবং দেশের মধ্যে পশ্চিমা সেনা রাখার অনুমতি না দিক।
পরবর্তীতে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ একটি সাক্ষাৎকারে বলেছেন, জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদসহ কিছু দেশের উচিত ইউক্রেনের নিরাপত্তার গ্যারান্টি দেওয়া।
এর আগে গত শুক্রবার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পুনরায় হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, দুই সপ্তাহের মধ্যে ইউক্রেনের সঙ্গে শান্তি চুক্তিতে অগ্রগতি না হলে রাশিয়ার ওপর নতুন অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হতে পারে। আলাস্কায় পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের এক সপ্তাহ পর এ কথা বলেন তিনি।
ভ্যান্স বলেন, ট্রাম্প এই মাসে রাশিয়ার তেল ক্রয়ের কারণে ভারতের ওপর ২৫ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করেছেন। এই ধরনের পদক্ষেপকে অর্থনৈতিক চাপ হিসেবে শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রয়াসে ব্যবহার করা হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘ট্রাম্প স্পষ্ট করতে চেয়েছেন, রাশিয়া যদি হত্যা বন্ধ করে, তবে বিশ্ব অর্থনীতিতে পুনরায় যোগ দিতে পারবে তারা। কিন্তু যদি তারা হত্যা বন্ধ না করে, তবে তারা (সারা বিশ্ব থেকে) বিচ্ছিন্ন থাকবে।’